প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর রাঙামাটিতে পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছেন। ২৪ দিন পর ১ নভেম্বর থেকে জেলা প্রশাসন রাঙামাটিতে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিতকরণের নির্দেশনা তুলে নেয়। ফলে গত শুক্রবার ও গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটিতে কাপ্তাই হ্রদসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা দেখা গেছে।
তবে খাগড়াছড়ি হয়ে যেতে হয় বলে বাঘাইছড়ির সাজেক ভ্যালিতে এখনো পর্যটকেরা আসতে পারছেন না। ৫ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা থেকেও বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা যায়।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পর পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছেন। তবে এখনো আগের মতো আসছেন না। মানুষের প্রস্তুতিও দরকার। আগামী দু-এক সপ্তাহে পর্যটকদের ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনার পর গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাঙামাটি ভ্রমণে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় জেলা প্রশাসন। এর পর থেকে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ, আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে। এতে জেলার পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, ব্যবসায়ী, আবাসিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট কটেজের ওপর নির্ভরশীল হাজারো মানুষ কার্যত বেকার হয়ে পড়েন।
পর্যটনসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে রাঙামাটিতে পর্যটকদের ভ্রমণের বিধিনিষেধ তুলে নেয় জেলা প্রশাসন। এতে ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকেরা নির্ভয়ে ভ্রমণে আসতে পারবেন বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকেরা আগাম বুকিং নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
রাঙামাটি আবাসিক হোটেল-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি মো. মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘অনেক দিন পর পর্যটকেরা রাঙামাটি বেড়াতে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আমরাও সেভাবে তাঁদের বরণের জন্য প্রস্তুত। আশা করছি, ভবিষ্যতে সাপ্তাহিক ছুটিগুলোতে পর্যটকে ভরে উঠবে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলো।’
উল্লেখ্য, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সহিংসতার ঘটনার পর জরুরি আইনশৃঙ্খলা সভায় ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাঘাইছড়ির সাজেক ভ্যালিতে পর্যটকদের ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত নিরুৎসাহিতকরণের সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর ২৪ দিন সাজেকসহ রাঙামাটি জেলায় পর্যটক ভ্রমণে বিধিনিষেধ জারি করা হয়।
রাঙামাটির পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফকরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত শুক্রবার আমাদের ঘাটে ১৫টি নৌযান ভাড়া হয়েছে। গতকাল শনিবারও বেশ কিছু নৌযান ভাড়া হয়েছে। আশা করছি, ধীরে ধীরে আরও নৌযান ভাড়া বাড়বে।’