শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিনটি হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় হত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা হয়েছে ঢাকায়। অন্যটি নারায়ণগঞ্জে।
এ ছাড়া আজ সোমবার ঢাকার সিএমএম আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি হত্যা মামলা নেওয়ার আবেদন জমা পড়েছে। এ–সংক্রান্ত মামলা হয়েছে কি না, আদালত সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এর পর থেকে সোমবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে ১৯৭টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৭৬টি হত্যা মামলা। এসব মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।
বাড্ডায় দোকানের কর্মচারীকে হত্যা
রাজধানীর বাড্ডায় রফিকুল ইসলাম নামের এক ফার্নিচার দোকানের কর্মচারীকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে রফিকুল ইসলামের মামা মুহাম্মদ লুৎফর রহমান বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা করেন।
মামলার আরজিতে অভিযোগ আনা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বেলা একটার দিকে বাড্ডার বিসমিল্লাহ ইন্টারন্যাশনালের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। তখন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠন ও পুলিশ নির্বিচার আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করেন। তখন আন্দোলনে অংশ নেওয়া রফিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গত ২৭ আগস্ট শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রফিকুল ইসলাম মারা যান।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।
মিরপুরে গুলিবিদ্ধ তরুণের মৃত্যু
রাজধানীর মিরপুরে আশরাফুল ইসলাম নামের এক তরুণকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৯৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানীর মিরপুর থানায় এ মামলা রেকর্ড হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ আগস্ট সন্ধ্যা সাতটার সময় মিরপুর মডেল থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার মিছিল চলছিল। মিছিলে অংশ নেন আশরাফুল। পরে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক– দেড়শ জন ছাত্র–জনতার মিছিলে হামলা চালায়। পরে গুলিও চালায়। তখন আশরাফুল গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, ইলিয়াস মোল্লাকে আসামি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে গুলিবিদ্ধ স্কুলছাত্রের মৃত্যু
আরাফাত হোসেন (১৬) নামের এক কিশোরকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সোমবার এ মামলা করেন আরাফাতের বাবা আকরাম হোসেন।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২১ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে সে মারা যায়। আরাফাত হোসেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ওয়াসেকপুর উচ্চবিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে আসামি করা হয়েছে।