সিলেটে বিমানের টিকিটের জন্য অতিরিক্ত টাকা দাবির অভিযোগ

টিকিটের জন্য অতিরিক্ত টাকা দাবি করার অভিযোগে সিলেটে বাংলাদেশ বিমানের কার্যালয়ের সামনে বিমানবন্দর-আম্বরখানা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসীরা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার-পাঁচ দিন ধরে বিমান কার্যালয়ে প্রবাসীরা ভিড় করছেন। তাঁদের প্রায় সবাই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থাকেন। গতকাল প্রবাসীদের কর্মসূচির কারণে সিলেট বিমানবন্দর-আম্বরখানা সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সিলেট বিমানবন্দর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা মহামারি চলাকালে অধিকাংশ প্রবাসী দেশে ফেরেন। কেউ কেউ করোনা পরিস্থিতির আগে থেকেই দেশে অবস্থান করছিলেন। পরে সারা বিশ্বে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর ফিরতি টিকিট করে এলেও অনেক প্রবাসী ফিরতে পারেননি। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় প্রবাসীরা ফিরতে শুরু করেছেন। এমন পরিস্থিতিকে পুঁজি করে বিমানের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী টিকিটের জন্য সিরিয়াল নিতে এবং কার্যালয়ে প্রবেশ করতে টাকা দাবি করছেন।

কয়েকজন প্রবাসী অভিযোগ করেন, বিমান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বিমানের টিকিট নেই বলে জানান। তবে বাড়তি টাকা দিলে টিকিটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে বাড়তি টাকায় মিলছে বিমানের টিকিট। এরই প্রতিবাদে গত বুধবার সকালে বিমান কার্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার থেকে আসা দুবাইপ্রবাসী আমির উদ্দিন বলেন, ‘সকালে কার্যালয়ে এলেও আমাকে ভেতরে যেতে দিচ্ছে না। এর আগে গত সোমবার একবার এসে সিরিয়াল দিয়ে যাই। এখন বলছে, কোনো সিরায়াল নেই, টিকিটও নেই।’

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা আবুধাবিপ্রবাসী রাজন আহমদ বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে ফিরতি টিকিটসহ দেশে এসেছিলাম। তবে করোনার কারণে সেটি এখন বাতিল। তাই নতুন করে টিকিট করতে এসেছি। এখন কার্যালয়ের সামনে থেকেই বলছে, আগামী বেশ কয়েক দিনের টিকিট নেই। ভেতরে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের কথা বলতে দিচ্ছে না। গেটে থাকা কিছু ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে ভেতরে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন।’

টিকিটের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় ও দাবি করার অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ বিমান সিলেটের ব্যবস্থাপক মো. শাহনেওয়াজ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে বিমানের টিকিটের সংকটের কারণে সিলেটে আটকে পড়া প্রবাসীরা বিমানের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানের কোনো ফ্লাইটে আসন খালি নেই। টিকিটের জন্য অতিরিক্ত টাকা দাবির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রবাসীদের বলেছি, যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় টিকিটের সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা তাঁদের কাগজপত্রের ফটোকপি ও মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে রেখেছি। টিকিটের জন্য আমরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করব বলে জানিয়ে দিয়েছি।’