আর ফুটপাতে জুতা সেলাই করতে হবে না সবিতার
নারী হয়েও ফুটপাতে বসে অন্যের জুতা মেরামত করেন সবিতা দাস। এত কষ্ট করলেও আয় যা হয়, তা দিয়ে ঠিকমতো সংসার চলে না। তবে আর রোদে পুড়তে বা বৃষ্টিতে ভিজতে হবে না এই নারী মুচিকে। ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের চামটা গ্রামের এই বাসিন্দা পেয়েছেন নতুন ঘর। সেখানে জুতা মেরামতের পাশাপাশি নতুন জুতা বেচাকেনা করে ভালো রোজগার করতে পারবেন তিনি।
সবিতা দাসকে নতুন দোকানঘর আর জুতা-স্যান্ডেল দিয়ে পুনর্বাসিত করেছেন তরুণ ব্যবসায়ী ছবির হোসেন। বুধবার সকাল ১০টায় ঝালকাঠি সদর উপজেলার চামটা বাজারে সবিতার হাতে দোকানের দলিল ও চাবি তুলে দেন তিনি। পরে কিনি ফুটপাত থেকে উঠে এসে ওই দোকানঘরে কার্যক্রম শুরু করেন।
সবিতা দাস বলেন, ‘আমি নিজের দোকানে উঠতে পেরে খুশি হয়েছি। এখন পুরোনো জুতা সেলাইয়ের পাশাপাশি নতুন জুতা-স্যান্ডেলও বিক্রি করতে পারব। এ জন্য আমি ও আমার পরিবার ব্যবসায়ী ছবির হোসেনের কাছে কৃতজ্ঞ।’
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠি সদরের চামটা গ্রামে বংশপরম্পরায় বাস করছে একটি রবিদাস (মুচি) পরিবার। এই পরিবারের সন্তান সবিতা দাস। তাঁর বাবা মারা গেছেন অনেক আগেই। নারী হওয়া সত্ত্বেও জীবিকার তাগিদে তিনি অন্যের জুতা-স্যান্ডেল মেরামতের কাজ শুরু করেন। চামটা বাজারে সড়কের পাশে ফুটপাতে বসে মুচির কাজ করে তিনি ১২ বছর ধরে সংসার চালিয়ে আসছেন। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে তিনি প্রতিদিন ফুটপাতে জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে শহরের তরুণ ব্যবসায়ী ছবির হোসেন তাঁকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন। তিনি এক লাখ টাকা খরচ করে একটি দোকানঘর তুলে দেন। সঙ্গে নতুন জুতা-স্যান্ডেল কিনে ব্যবসায় সবিতাকে পুনর্বাসিত করেন। এই দোকানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সবিতা শু হাউস’।
ব্যবসায়ী ছবির হোসেন বলেন, ‘সবিতা নারী হয়েও ফুটপাতে মুচির কাজ করেন। বিষয়টি আমাকে নাড়া দেয়। আবার তিনি যা আয় করেন, তা দিয়ে পরিবারের জন্য ঠিকমতো খাবারও জোগাড় হয় না। তাই সবিতাকে একটি দোকানঘর কিনে তাতে মালামাল তুলে দিলাম। এখন নিশ্চিন্তে তিনি ব্যবসা করে আয়রোজগার করতে পারবেন।’