কিশোরের আত্মহত্যা: এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামে এক কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার চট্টগ্রাম আদালতে মামলাটি করেন ওই কিশোরের মা রুবিনা আক্তার। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামি সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই হেলাল খান। তিনি চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানায় কর্মরত ছিলেন।
রুবিনা আক্তারের আইনজীবী রোকসানা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় এসআই হেলাল ও তাঁর সোর্সদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। আদালত ঠিকানা স্পষ্ট না হওয়ায় সোর্সদের বাদ দিয়ে হেলালের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
দুই সোর্স নিয়ে ১৬ জুলাই রাতে নগরের আগ্রাবাদ বাদামতলী বড় মসজিদ গলিতে যান এসআই হেলাল খান। সেখানে দশম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোর সালমান ইসলাম ওরফে মারুফের সঙ্গে সোর্সসহ পুলিশ কর্মকর্তার কথাকাটাকাটি হয়। এরপর হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। সালমানের পরিবারের দাবি, টাকার জন্য এসেছিলেন এসআই হেলাল। এক লাখ টাকা দাবি করেছিলেন এসআই। নইলে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে ভয়ে সালমানের পরিবার ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। এর মধ্যে সালমানের মা এবং বোনের সঙ্গেও পুলিশ ও সোর্স ধস্তাধস্তি শুরু করে। তাতে সালমানের বোন অচেতন হয়ে পড়েন। পুলিশ বোন ও মাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে সালমানের ভেবেছিল, পুলিশ তার মা- বোনকে থানায় নিয়ে গেছে। এতে ক্ষোভে সে বাসায় আত্মহত্যা করে।
ঘটনার পর পুলিশ কমিশনার তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রধান নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদ ২০ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দেন। সেখানে বলা হয়, ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে এই কাণ্ড ঘটেছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পুলিশ কমিশনার হেলাল খানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং বিভাগীয় মামলা করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ডবলমুরিং থানার ওসি সুদীপ দাশকে শোকজ করে। তাঁর গাফিলতির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। পরে নগরের ১৬ থানার প্রায় ৪০ জন এসআই, এএসআইকে বদলি করেন পুলিশ কমিশনার। যাদের বিরুদ্ধে সাদা পোশাকে অনুমতি ছাড়া অভিযান পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে।