করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ২২ হাজার চাষি পাচ্ছেন বিনা মূল্যে সেচ সুবিধা
চলতি আমন মৌসুমে রাজশাহীর বাগমারার ২২ হাজার চাষি বিনা মূল্যে খেতে সেচ দিতে পারবেন। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) চাষিদের খেতে বিনা মূল্যে পানি সেচ দেবে। করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাগমারার আঞ্চলিক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, করোনাকালে বিভিন্ন পেশার মানুষের মতো চাষিরাও ক্ষতির শিকার হয়েছেন। অনেকে পুঁজি হারিয়ে ফেলেছেন। চলতি মৌসুমে তাঁরা চাষাবাদবিমুখ হতে পারেন, এ আশঙ্কায় চাষিদের প্রণোদনা হিসেবে বিনা মূল্যে ধানখেতে পানি সেচের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে অনুসারে এবার উপজেলার ৪৫০টি সেচ পাম্পের মাধ্যমে খেতে সেচ দেওয়া শুরু হয়েছে। গত ২২ জুন স্থানীয় সাংসদ এনামুল হক এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন।
বিএমডিএর বাগমারার সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ উপজেলার ১১ হাজার ৪৬৩ হেক্টর আউশের খেতে এবার বিনা মূল্যে পানি সেচ দেওয়া শুরু করেছে। উপজেলার ২২ হাজার কৃষক এ সুবিধা সরাসরি ভোগ করবেন। তাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ৪৫০টি সেচ পাম্পের (গভীর নলকূপ) বিদ্যুৎ বা ডিজেলের খরচ কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এ জন্য গভীর নলকূপের অপারেটরদের নির্দেশনাসহ তাঁদের কার্ডে রিচার্জ করে দেওয়া হয়েছে। ধান ঘরে ওঠা পর্যন্ত সেচের খরচ কর্তৃপক্ষ বহন করবে। এ জন্য ৪৬ লাখ ১২ হাজার ৪২৪ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ও ডিজেল কেনায় এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
খদ্দকৌড় গভীর নলকূপের অপারেটর রোজিনা আক্তার বলেন, আগে কৃষকদের টাকা দিয়ে ধানখেতে সেচ দিতে হতো। তবে এবার বিএমডিএ দপ্তর থেকে তাঁদের খরচ দেওয়া হচ্ছে। চাষিদের কাছ থেকে সেচের জন্য কোনো চার্জ তাঁরা নিচ্ছেন না।
মচমইল গ্রামের চাষি ইব্রাহিম হোসেন, দধির খয়রা গ্রামের আবদুস সালামসহ ৩০-৩৫ জন বলেন, এবার তাঁরা আউশ চাষ শুরু করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তাঁদের সেচের চার্জ দিতে হয়নি। বিগত বছরে চাপ দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে সেচের চার্জ আদায় করা হতো। অনেক স্থানে সেচের বদলে খেতের এক-তৃতীয়াংশ পাকা ধান কেটে নিয়ে যেতেন অপারেটরেরা। তবে এবার সরকার সুযোগ দেওয়াতে নিশ্চিন্তে চাষাবাদ করতে পারছেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, সরকারের এই বিনা মূল্যে সেচের সুবিধা চাষিরা সরাসরি ভোগ করছেন। করোনাকালে এ সুবিধা পাওয়াতে চাষিরা বেশ উপকৃত হবেন এবং ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।