ডুবোচরে আটকে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধার হয়েছে
মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথের বিকল্প চ্যানেলের ডুবোচরে আটকে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) উদ্ধারকারী জাহাজ। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ফেরিটি উদ্ধার করা হয়। তবে চ্যানেলমুখে তীব্র স্রোত ও ডুবোচরে আটকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকায় রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। কাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সীমিত আকারে ফেরি চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় দুই ঘাটে আটকা পড়েছে অন্তত আট শর বেশি যানবাহন। দুর্ভোগে পড়েছেন এ নৌপথে আসা যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকেরা।
বিআইডব্লিউটিএ শিমুলিয়া ঘাটের মেরিন কর্মকর্তা আহমদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডুবোচর থেকে ফেরিটি উদ্ধার করে শিমুলিয়া ঘাটে নেওয়া হয়েছে। তবে রাতে বিকল্প চ্যানেল ঘুরে ফেরি চলাচল করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ফেরি ডুবোচরে আটকে আবারও একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমরা রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখব। কাল সকাল থেকে ফেরি চলাচল শুরু হবে।’
বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহন এবং শতাধিক যাত্রী নিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নামে একটি রো রো ফেরি কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ছেড়ে শিমুলিয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছিল। ফেরিটি নৌপথের বিকল্প চ্যানেলে প্রবেশ করলে পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের মুখে পড়ে। স্রোত সামলাতে না পেরে ফেরিটি যানবাহন ও যাত্রীদের নিয়ে ডুবোচরে আটকে যায়। চ্যানেলে ফেরি আটকে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ছোট–বড় সব ধরনের ফেরি চলাচল। এরপর আজ সকালে ফেরিটি উদ্ধার করতে আসে বিআইডব্লিউটিসির উদ্ধারকারী জাহাজ আইটি ৩৯৫-৩৯৬।
বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ফেরির কর্মীরা জানান, প্রতিবছর বর্ষার সময় এই নৌপথের চ্যানেলমুখে পলি জমা হয়। চ্যানেলমুখে গত ২৯ জুন রাত ১২টায় প্রথমবারের মতো ডুবোচরে আটকে যায় ফেরিটি। সারা রাত ফেরিটি আটকে থাকার পরদিন সকাল নয়টায় ডুবোচর থেকে মুক্তি পায়। এরপর গতকাল বিকেলে জাহাঙ্গীর ও কাকলি নামের দুটি ফেরি একই স্থানে এক ঘণ্টা ডুবোচরে আটকা পড়ে। ওই দিন সন্ধ্যার পর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ফেরিটি আবারও স্রোতের কবলে পড়ে ডুবোচরে আটকা পড়ে।
ঘাটে আটকা পড়া ঢাকাগামী পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ইলিয়াস ব্যাপারী বলেন, ‘দুদিন ধরে টার্মিনালে বসে আছি। ফেরি চলছে না, কবে চলবে তা–ও কেউ বলছে না। যে পরিমাণ গাড়ি ঘাটে জমা হয়েছে, জানি না কবে পারাপার হতে পারব।’
কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় আমাদের ঘাটের চারটি টার্মিনাল যানবাহনে ভরা। ওপারেও একই অবস্থা। দুই ঘাট মিলিয়ে আট শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। সকাল থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলে যানবাহনের চাপ কমে যাবে।’