ছিন্নমূলদের খাবার জোগাচ্ছে 'ফুড ফর গুড'
ওরা রাস্তায় থাকে। সেখানেই ঘুমায়। কিন্তু না খেয়ে কি ঘুমানো যায়? এ ভাবনা নাড়া দেয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেহেদী হাসানকে । এরপরের ভাবনা অন্তত রাতের খাবারটা তো ওদের মুখে তুলে দেওয়া যায়।এরপর এগিয়ে আসা।তাঁর উদ্যোগে এখন করোনাকালে ছিন্নমূলদের খাবার যোগাচ্ছে 'ফুড ফর গুড'।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ ইউনিভারসিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজিতে (বিউবিটি) বন্ধুরা মিলে গড়ে তোলে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'ইউনিভার্সাল এমিটি'। বিভিন্ন দুর্যোগে মানবিক সাহায্য দিতে কাজ করছেন তাঁরা। ঘূর্ণিঝড় আম্পান দুর্গতদের মধ্যেও ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চালিয়েছেন তাঁরা।
৭ জুন থেকে মিরপুর এলাকায় ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ শুরু করেছে ফুড ফর গুড। নিজেরা ঘরোয়া পরিবেশে রান্না করেন। জনসমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেরাই খাবার তুলে দিচ্ছেন অনাহারী মানুষের হাতে। প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ জন মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান সংগঠনটির সদস্যরা।
মেহেদী হাসান ও স্বেচ্ছাসেবকদের নিজেদের চাকরির বেতনের একটি অংশ দিয়ে চলছে এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রম। ধীরে ধীরে এটি বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে তাঁদের। রাজধানীর সব এলাকার ছিন্নমূল, ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে রাতের খাবার তুলে দেওয়ার ইচ্ছা আছে তাঁদের। প্রাথমিকভাবে ঢাকা ও খুলনা শহরের ছিন্নমূলদের খাবার জোগানোই তাঁদের লক্ষ্য।
এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদি হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অসহায়, বসতবাড়িহীন ও অনাহারী মানুষের অসহায়ত্ব আকাশছোঁয়া। তাই ছিন্নমূল ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে একবেলা খাবার তুলে দিতে চাই আমরা। আর এটি প্রতিদিন চলমান রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে ইউনিভার্সাল এমিটি।’
সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, মহামারি বা বন্যা সব ধরনের পরিস্থিতিতে মানবতার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তাঁরা। আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনার পাইকগাছা ও দাকোপ এলাকায় প্রায় ১৫০টি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়া প্রতিবছর নিয়মিতভাবে কিছু কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি। এর মধ্যে আছে দেশের বন্যাকবলিত এলাকায় খাবার ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, পথশিশুদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, এতিমখানায় খাদ্য বিতরণ, সাহ্রি ও ইফতার বিতরণ, ঈদের খাদ্য ও নতুন কাপড় বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, অস্বচ্ছল পরিবারে চিকিৎসাসেবা, বিয়েতে আর্থিক অনুদান এবং রক্তদান কার্যক্রম।