২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

প্রবাসীদের ট্রলার ভেবে ইটপাটকেল, জখম ৪

এলাকাবাসী ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে হাত তুলে আকুতি জানান ট্রলারে থাকা লোকজন। টরকী, গৌরনদী, বরিশাল, ২৭ মার্চ। ছবি: সংগৃহীত
এলাকাবাসী ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে হাত তুলে আকুতি জানান ট্রলারে থাকা লোকজন। টরকী, গৌরনদী, বরিশাল, ২৭ মার্চ। ছবি: সংগৃহীত

ট্রলারে করে এলাকায় ফিরছিলেন ৩০–৩৫ জন। কয়েকজনের সঙ্গে ছিল টেলিভিশন ও ফ্রিজ। এলাকার কয়েকজন ভেবে বসেন, ট্রলারে করে প্রবাসী লোকজন এসেছেন। তাঁদের চিৎকারে অন্যরা জড়ো হন। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ট্রলারটি তীরে ভিড়তে দেননি তাঁরা। উল্টো ইটপাটকেল মারেন। এতে চারজন রক্তাক্ত জখম হন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বরিশালের গৌরনদীতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশে এখন দেশে বাস ও নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই নির্দেশ অমান্য করে বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ থেকে একটি ট্রলার বরিশালের বানারীপাড়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এটির চালক হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা আবু হানিফ (৪০)। তাঁর ট্রলারে ৩০–৩৫ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে ট্রলারটি পালরদী নদী হয়ে গৌরনদীর টরকী এলাকায় পৌঁছায়। কিন্তু জ্বালানি শেষে হয়ে যাওয়ায় ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় জ্বালানি নিতে চালক ট্রলারটিকে নদীর তীরে ভেড়ানোর চেষ্টা করেন।
ট্রলারভর্তি যাত্রী দেখে ঘটনার সময় ওই এলাকায় থাকা কয়েকজনের সন্দেহ হয়। ট্রলারটিতে বিপুলসংখ্যক যাত্রীর পাশাপাশি কয়েকজনের কাছে টিভি, ফ্রিজ ছিল। এলাকাবাসী ভাবতে থাকেন, এই ট্রলারে করে প্রবাসী লোকজন গোপনে এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তাঁদের মাধ্যমে এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যেতে পারে। এ খবর চাউর হওয়ায় ধীরে ধীরে ঘটনাস্থলে শত শত লোক জড়ো হয়ে যান।
ট্রলারচালক আবু হানিফ বলেন, এলাকাবাসী ট্রলারটিকে তীরে ভিড়তে বাধা দেন। একপর্যায়ে উপর্যুপরি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। ইটের আঘাতে ট্রলারের যাত্রী শারমিন আক্তার (৩০), রবিউল ইসলাম (৩৮), জাহাঙ্গীর হোসেন (২৬) ও মেনহাজ হাওলাদার (২২) রক্তাক্ত জখম হন। আহত সবার বাড়ি বানরীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানা থেকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা মাইকিং করে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে। পরে ট্রলার থেকে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে। তাঁদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করার পাশাপাশি ট্রলারচালকের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, যাত্রীবাহী ট্রলার নদীর তীরে ভিড়তে দেখে ২–৩ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে গিয়েছিল। তারা করোনা-আতঙ্কে ট্রলারটি তীরে ভিড়তে নিষেধ করে। নিষেধ না মানায় হামলা চালানো হয়। পুলিশ সময়মতো ঘটনাস্থলে না পৌঁছালে প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।