প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন খালেদা জিয়ার ভাই-বোন
পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়ার আবেদন করেন বেগম খালেদা জিয়ার ভাই-বোনসহ পরিবারের সদস্যরা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আজ মঙ্গলবার গুলশানের নিজ বাসভবনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন আগে খালেদা জিয়ার ভাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি দরখাস্ত এবং আমার কাছে একটি দরখাস্ত করেছিলেন যে বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়ার জন্য। সেখানে তিনি লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা করানোর কথা বলেছিলেন। এরপর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার, বোন সেলিমা ইসলাম, বোনের স্বামী রফিকুল ইসলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একই বিষয়ে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেখানেও এই আবেদনটির ব্যাপারে তাঁরা কথা বলেছিলেন। তাঁরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেছিলেন, নির্বাহী আদেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন।’
মুক্তি পেলেও খালেদা জিয়াকে বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হবে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপধারা ১-এ খালেদা জিয়ার সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাঁকে ঢাকাস্থ নিজ বাসায় থেকে তাঁর চিকিৎসা গ্রহণ করার শর্তে। এই সময় দেশের বাইরে গমন না করার শর্তে মুক্তি দেওয়া জন্য আমি মতামত দিয়েছি। সেই মতামত এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হচ্ছে, আইনি প্রক্রিয়ায় তাঁকে এই দুই শর্ত সাপেক্ষে তাঁর দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার জন্য।’
খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় মানবিক কারণে দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এইখানে কিন্তু বলা হচ্ছে না যে তিনি হাসপাতালে গিয়ে তাঁর চিকিৎসা নিতে পারবেন না। হাসপাতালে ভর্তির ব্যাপারে তাঁর কন্ডিশনের ওপরে দেখা যাবে। সেই জন্যই উল্লেখ করা হয়েছে যে বাসায় থেকে তাঁর চিকিৎসা করানোর। এই কারণে বেগম খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় মানবিক কারণে সরকার সদয় হয়ে তাঁর দণ্ডাদেশ স্থগিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। হাসপাতালে নিশ্চয়ই যেতে পারবেন। হাসপাতালে যদি ভর্তি হতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের সবচেয়ে মানসম্পন্ন হাসপাতালে তিনি আছেনই। সেখানে তো তাঁর চিকিৎসা চলছেই। হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি হতে হবে, সেটা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বোঝা যাবে। কিন্তু শর্ত হচ্ছে, তিনি ঢাকায় তাঁর নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। এবং ওই সময় তিনি দেশের বাইরে গমন করতে পারবেন না। যখন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে মুক্তি দেবে, তখন থেকে দণ্ডাদেশ স্থগিত কার্যকর হবে।’