ফুলের দোকানে বসন্ত সাজ
‘আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়, আহা আজি এ বসন্তে’— রবি ঠাকুর যখন গানটি লিখেছিলেন, তখন তিনিও হয়তো বসন্তরাঙা ফাগুনে বসেই লিখেছিলেন।
চির অমলিন যৌবনের ঝাঁজে ভরা এই গান প্রত্যেক তরুণ-তরুণীর হৃদয়ের কথা বলে। শীতের জড়তা কাটিয়ে প্রকৃতিও তার যৌবন নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে ফাল্গুনের দ্বারপ্রান্তে। কুঁড়িগুলো চোখ মেলে চাইছে, ডালে ডালে কুহু রবে ডাকছে কোকিল। আবেগে আপ্লুত মন যেন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ফাগুনরাঙা দিনকে বরণ করে নেওয়ার জন্য।
সাজসজ্জা, হাসি আর গানের মাধ্যমে বসন্তবরণ যেন এখন প্রাণের আবেদন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলার তরুণ-তরুণীদের কাছে। বিশেষ এই দিনে সব তরুণীই চায় নিজেকে সময়োপযোগী করে সাজিয়ে নিতে। তাঁদের সেই আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই নতুন সাজে সেজেছে খুলনার ফুলের দোকানগুলো। বাহারি ফুল আর সাজসজ্জার সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছে তারা।
এবার বসন্ত এসেছে নতুন মাত্রায়। বসন্তের প্রথম দিন আর ভালোবাসা দিবস পড়েছে একই তারিখে। এ কারণে ব্যবসায়ীরাও প্রস্তুতি নিয়েছেন একটু বেশি।
ফুলের ব্যবসায়ীরা জানান, মূলত বছরের কয়েকটি দিনে ফুলের ব্যবসা ভালো হয়। এর মধ্যে পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস অন্যতম। এবার দুটি উৎসব পড়েছে একই দিনে। ভালোবাসার সাথে বসন্তের আগমনকে একাকার করে দিতে এবার তাঁদের প্রস্তুতিও একটু বেশি। তবে দিনটি ছুটির দিন না হলে হয়তো আরও বেশি ভালো হতো বলে মনে করছেন তাঁরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ফারাজিপাড়ায় অবস্থিত ফুল মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে জারবেরা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধা, জিপসি, গ্লাডিওলাস, ক্যালেন্ডোলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল। ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ফুলের তাজও। এগুলোর কোনোটি আবার কৃত্রিম ফুল দিয়ে তৈরি। পুরো এলাকাটিতে ছড়িয়ে পড়েছে বাহারি ফুলের গন্ধ, যে গন্ধ জানান দিচ্ছে, বসন্ত এসে গেছে। ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে দোকানগুলো সাজানো হয়েছে ভিন্নরূপে।
বিভিন্ন বয়সের মানুষের ফুল কেনার হিড়িকে পুরো বাজার পরিণত হয়েছে একটি উৎসবস্থলে। ওই উৎসবে শামিল হয়েছেন তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীরাও। কেউ কিনছেন গোলাপ, কেউ রজনীগন্ধা আবার কেউবা কিনছেন মাথায় পরার জন্য মানানসই ফুলের তাজ।