রাজধানীতে তিন দিনে পাঁচ কিশোরী ধর্ষণের শিকার

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

তিন দিনের ব্যবধানে ঢাকায় তিনটি পৃথক গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গণধর্ষণের শিকার হয়েছে পাঁচ কিশোরী। এসব ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। পলাতক আছেন আরও ছয় আসামি। গ্রেপ্তার হওয়া চার আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সামাদনগর এলাকায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে গার্মেন্টসের কাজ শেষে বাসায় ফিরছিল ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী। তখন চার ব্যক্তি অস্ত্রের মুখে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে সামাদনগর কবরস্থানের কাছে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে গণধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর খালা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত জাকির হোসেন (২২) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। আদালত গত রোববার তাঁকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। পলাতক তিন আসামি হলেন যাত্রাবাড়ীর সামাদনগর এলাকার শান্ত (২৪), কাজলা এলাকার শাকিল আহম্মেদ (২৫) ও মো. হানিফ (২৭)।

এ ছাড়া রাজধানীর কদমতলী এলাকায় ৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে একটি ভাড়া বাসায় ঢুকে ১৫ ও ১৩ বছর বয়সী দুই কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন সোহেল ব্যাপারী (৩৮), রানা ব্যাপারী (৩২) ও আক্তার আলী (৩৮)। ঢাকার আদালত গতকাল সোমবার তিনজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

ঢাকার আদালতকে কদমতলী থানার পুলিশ এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, মামলার বাদীর ছেলে, ননদ (১৫), ননদের বান্ধবী (১৩) বাসায় ছিল। বাদীর শ্বশুর পেশায় একজন নৈশপ্রহরী। সেদিন রাত ১০টায় তিনি তাঁর কাজে চলে যান। রাত ১১টার দিকে তিনজন লোক এসে দরজায় শব্দ করেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তিন আসামি ঘরের ভেতর ঢুকে বাদীর ছেলেকে অন্য কক্ষে আটকে রাখেন। পরে দুই কিশোরীকে তারা ধর্ষণ করেন।

একই দিন রাত একটা থেকে ভোররাত পর্যন্ত রাজধানীর বাড্ডার ডিআইটি রোডের একটি গোডাউনে তিনজন মিলে ১৩ বছর বয়সী দুই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এক কিশোরীর মা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে গতকাল সোমবার বাড্ডা থানায় মামলা করেন। তিন আসামির কাউকেই পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পলাতক তিন আসামি হলেন ইমন (৩০), রব (৩২) ও কবির (৩০)।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী তাঁর মা–বাবার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে থাকত। ওই বাসায় গত ২৬ জানুয়ারি বরিশাল থেকে কিশোরীর এক বান্ধবী বেড়াতে আসে। ওই কিশোরীর সঙ্গে বাড্ডা এলাকার এক কিশোরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই যুবকের সঙ্গে দেখা করতে দুই কিশোরী বাড্ডা এলাকায় আসে। দেখা হওয়ার পর রাত ১২টার দিকে দুই কিশোরী রাস্তা হারিয়ে ফেলে। তখন তিন আসামি ওই দুই কিশোরীকে বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে বাড্ডার ডিআইটি রোডের একটি গোডাউনে নিয়ে আসেন। পরে সেখানে দুই কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসীন গাজী প্রথম আলোকে বলেন, দুই কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। যেকোনো সময় তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।