দিয়ার ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছিলেন মা
রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় করা মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত এক শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীমের মা রোকসানা বেগম।
আজ রোববার বিকেলে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইমরুল কায়েস। এতে জাবালে নূর বাসের দুই চালক ও এক সহকারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ রায় হবে বলে সকাল থেকেই কান্না করছেন দিয়ার মা রোকসানা বেগম। বেলা একটার দিকে মহাখালীর দক্ষিণপাড়ায় দিয়াদের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, বসার ঘরের সোফায় বসে মেয়ের ছবি আগলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন এই মা।
রায় শোনার পর দিয়ার মা রোকসানা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট। আমার মেয়েকেতো আর আমি ফিরে পাব না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার দিয়া বড় হয়ে আইনজীবী হতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হলো না। শহীদ রমিজউদ্দিন স্কুলসংলগ্ন রাস্তায় যে আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে তা দিয়া ও রাজীবের নামে নামকরণ করা হোক। এটাই আমার দাবি।’
গত বছরের ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান উড়ালসড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ও ৯ জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মীম (১৬)।
রোকসানা বেগম জানান,তাঁর ছোট মেয়েটার বয়স ৪ মাস। এই মেয়ের নামও রেখেছেন দিয়া খানম মীম।
দিয়ার বড় বোন রোকেয়া খানম রিয়া বলেন, 'সেদিন সকালে দিয়া নাশতা করে বাসা থেকে বের হয়নি। দিয়া কলেজে যাওয়ার পর আমিও কলেজে যাই। কলেজ শেষে বাসায় ফিরে দেখি কেউ নেই। পাশের বাসার আন্টিরা জানালেন, মীম অ্যাকসিডেন্ট করেছে। মীম না থাকার পর থেকে আমার মা সারা দিন কান্না করে। ছোট বাবুটা আমার কাছেই থাকে।'
দিয়া-রাজীবের মৃত্যুর পর গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। ওই আন্দোলনে হামলা চালানো হয় শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর। এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন করে।