ঢাকায় পেট্রলবোমাসহ জামায়াতের ১৮ জন গ্রেপ্তার
রাজধানীর কাফরুল এলাকা থেকে পেট্রলবোমাসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কাফরুল থানা-পুলিশ। কাফরুল থানা-পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া ১৮ জনের মধ্যে ১৭ জন জামায়াতের নেতা–কর্মী। অপর ১ জন কিশোরও জামায়াতসংশ্লিষ্ট সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ শনিবার ১৭ জনের মধ্যে ১১ জনকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন। বাকি ৬ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিমুজ্জামান বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, জামায়াতের এসব নেতা–কর্মী পেট্রলবোমাসহ কাফরুল এলাকার ইব্রাহিমপুর বাজার মসজিদসংলগ্ন একটি বাসায় একত্র হন। পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গেলে কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
পুলিশ ও মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে কাফরুল এলাকার ওই বাসায় ১৭ জন একত্র হন। কাফরুল থানা এলাকার যেকোনো স্থানে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য এই বৈঠক করে। আসামিদের কাছ থেকে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্রের বই, জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সদস্য হওয়ার ১০০টি ফরম, জামায়াতে ইসলামীর ৫০টি লিফলেট ও ১২টি পেট্রলবোমা উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান বাদী হয়ে ১৮ জনের নামে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করেন।
১৭ জন আসামিকে আজ শনিবার ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী রায়হানুর রহমান আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে জানান, আসামিরা সবাই মিলে দেশে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঘটানো, দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য পেট্রলবোমা নিয়ে বৈঠক করছিলেন। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য এই আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ১১ জনকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। বাকি ছয়জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আর কিশোরকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
১১ জনের রিমান্ড
যে ১১ জনকে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন পাবনার ঈশ্বরদীর ফতে মোহাম্মাদপুর গ্রামের নাজমুল হাসান খান ওরফে বাবুল (৪৮), ফেনীর ছাগলনাইয়ার উত্তর পানুয়া গ্রামের আবদুল মতিন (৪৮), সিরাজগঞ্জের কুড়ালিয়া গ্রামের হায়দার আলী (৪০), ভোলার উত্তর দীঘলদি গ্রামের মিলন (৪৫), যশোরের চৌগাছার পলুয়া গ্রামের তারেক আহম্মেদ ওরফে তরিকুল ইসলাম (৩৯), গাজীপুরের শ্রীপুরে সোহেল রানা (৪৫), কুমিল্লার বুড়িচংয়ের রামচন্দ্রপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান (৪০), পটুয়াখালীর দক্ষিণ আদমপুর গ্রামের আবু তাহের গাজী (৪৫), ভোলার কালুপুর গ্রামের জুয়ের সরদার (৩০), নওগাঁর নিয়ামতপুরের সেকেন্দার আলী (২৫) এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাখারীকাঠি গ্রামের মুসা খলিফা (৩৩)।
কারাগারে পাঠানো ছয় আসামি হলেন ভোলা সদরের আবুল কালাম আজাদ (৫১), কুষ্টিয়ার কুমারখালী পানটি বাজারের রেজাউল ইসলাম (৫১), নীলফামারীর জলঢাকা থানার দুন্দিবাড়ীর রশিদুল ইসলাম (৭০), কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের ফেনুয়ার আবু সাদেক ওরফে ফরিদ (৬০), ভোলার বোরহান উদ্দিনের লক্ষ্মীপুর গ্রামের শাহ আলম (৫৩) ও নওগাঁর পত্নীতলার শিবপুর হাটের মোজাফফর ফকির (৬০)।