দাউদকান্দিতে জোড়াতালির সেতুতে ঝুঁকি
ঢাকা-বলদাখাল-মতলব সড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া খালের ওপর নির্মিত বেইলি সেতুটির পাটাতন ভেঙে গেছে। জোড়াতালি দিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কুমিল্লা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দাউদকান্দি উপজেলার পশ্চিম অঞ্চল, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সহজ করার জন্য ১৯৯১ সালে পদুয়া খালের ওপর বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এর দৈর্ঘ্য ৩০ মিটার এবং প্রস্থ ১০ দশমিক ২৫ মিটার। ওপরের পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় সেতুটি ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
গত শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সেতু এলাকায় দাঁড়িয়ে দেখা গেছে, সেতুর ওপর দিয়ে অনেক যানবাহন চলাচল করে। কিছুক্ষণ পর সেতুর দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। পণ্যবাহী ভারী যানবাহন সেতু পারাপারে অতিরিক্ত সময় লাগছে। কারণ, সেতুর পশ্চিম পাশে বাঁক থাকায় বেশি সমস্যা হচ্ছে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক দাউদকান্দির গোয়ালমারী গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন ও শ্রীরায়েরচর গ্রামের মোশারফ হোসেন বলেন, দাউদকান্দি পৌর সদরের বলদাখাল থেকে দাউদকান্দি উপজেলার শ্রীরায়েরচর পর্যন্ত শতাধিক অটোরিকশা, মতলব উপজেলার শত শত ব্যক্তিগত গাড়ি, মালবাহী ট্রাক, পিকআপ, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা এ সড়ক দিয়েই প্রতিদিন চলাচল করে। সেতুতে গাড়ি উঠলে মনে হয় সেতুটি এই বুঝি ভেঙে পড়ছে।
পদুয়া গ্রামের কৃষক আবদুল মালেক, বনুয়াকান্দি গ্রামের মফিজুল ইসলাম ও খালিসা গ্রামের হরি কমল মজুমদার বলেন, জোড়াতালির এ সেতু দিয়ে হিমাগার অথবা বাজারে কৃষিপণ্য নেওয়ার সময় সেতুটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তাঁদের তাড়া করে।
দাউদকান্দির উত্তর পদুয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন বলেন, জোড়াতালির সেতুটি ভেঙে একটি নতুন সেতু নির্মাণ করা খুবই জরুরি।
দাউদকান্দির মহিষমারী গ্রামের প্রবাসী কামরুল ইসলাম, মতলব উত্তরের বাংলাবাজারের ব্যবসায়ী হরেকৃষ্ণ সূত্রধর ও মামুন মিয়া বলেন, বেইলি
সেতুটির অবস্থা খুবই নড়বড়ে। সেতু ভেঙে যেকোনো সময় যাত্রী ও যানবাহনের চালক মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দাউদকান্দির নিচন্তপুর গ্রামের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক বদিউজ্জামান বলেন, ঢাকা-বলদাখাল-মতলব সড়কে যানবাহনের চাপ অত্যন্ত বেশি, পণ্যবাহী ভারী যানবাহন পারাপারের সময় সেতু এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ঈদ ও মতলব উত্তরের লেংটার মেলার সময় যাত্রীদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে পদুয়া খালের ওপর নির্মিত বেইলি সেতুটি দ্রুত ভেঙে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা দরকার।
দাউদকান্দির কয়রাপুর গ্রামের বৃদ্ধ হযরত আলী বলেন, বেইলি সেতুর হায়াত শেষ। সেতুটি পাকা হবে হবে বলে দীর্ঘ সময় ধরে হচ্ছে না।
মতলব উত্তর উপজেলার ছেঙ্গারচর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হানিফ সরকার ও মতলব উত্তরের দুদুয়া গ্রামের চাকরিজীবী জেরিন আক্তার বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ও মালবাহী ট্রাক-পিকআপ চলাচল করে। ভারী যানবাহন চলাচল করায় লোহার পাটাতনগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে সওজ ভেঙে যাওয়া পাটাতনগুলো মাঝেমধ্যে লোহার পাত দিয়ে ঝালাই করে রাখছে। স্থায়ী সমাধান হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে সওজ কুমিল্লার প্রকৌশলী জাফরুল হায়দার বলেন, ১২ ফুট সড়কটি ১৮ ফুট চওড়া করার প্রস্তাবের প্রস্তুতি চলছে। বরাদ্দ এলে পদুয়া খালের ওপর পাকা সেতু নির্মাণ করা হবে।