রংপুরে তিস্তার স্রোতে ভেসে গেল সংযোগ সড়ক
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের পূর্ব ইছলি গ্রামে তিস্তা নদীর পানির তোড়ে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। এ কারণে চারটি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের সড়কপথে উপজেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলো হলো পূর্ব ইছলি, পশ্চিম ইছলি, শংকরদহ ও বাগেরহাট।
তিস্তার পানি বেড়ে গত কয়েক দিন ধরে ইছলি-বাগেরহাট সড়কের ইছলি সেতুর সংযোগ সড়কে ভাঙন দেখা দেয়। গত রোববার সড়কটি একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এলাকার লোকজন নিজেদের উদ্যোগে ওই স্থানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ শুরু করেছেন।
এলাকার লোকজন বলেন, দুই বছর আগে বন্যায় রাস্তাটি ভেঙে যায়। তখন সেখানে মাটি ফেলে ভরাট করলেই চলাচল করা সম্ভব হতো। কিন্তু ভাঙা স্থানে দুই বছরেও মাটি ফেলা হয়নি। সেই ভাঙা অংশ গত দুই দিনের পানির তোড়ে আরও ভেঙে গেছে।
গতকাল বুধবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ইছলি-বাগেরহাট সড়কের ইছলি সেতুর পূর্ব দিকে সংযোগ সড়কের কাঁচা রাস্তাটি ভেঙে গেছে। ভাঙা সড়কের ওপর দিয়ে নদীর পানি বইছে। লোকজন সড়কের ভাঙা স্থানে বাঁশের খুঁটি দিয়ে সাঁকো তৈরি করছেন।
সাঁকো তৈরির কাজে ব্যস্ত কয়েকজন বলেন, সাঁকোটির দৈর্ঘ্য ১৫০ ফুট ও প্রস্থ চার ফুট। বাঁশের খুঁটির ওপর দিয়ে চাটাই দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হবে। এর ওপর দিয়ে মানুষের চলাচল করতে পারলেও যানবাহন যেতে পারবে না। তবে হেঁটে বাইসাইকেল নেওয়া যাবে।
সাঁকো নির্মাণকারীদের একজন পূর্ব ইছলি গ্রামের রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন, এর আগে শুকনা মৌসুমে চলাচল করা গেলেও দুই দিনের পানিতে সেটিও ডুবে যায়। নতুন করে আরও কিছু রাস্তা ভেঙে পড়ে। মানুষের চলাচলে যাতে উপকার হয় সে জন্য বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করা হচ্ছে।
একই এলাকার হামিদার রহমান বলেন, নিজেরাই টাকা তুলে এই সাঁকোর কাজ শুরু করা হয়েছে।
এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন শংকরদহ গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক আবদুল জলিল। তিনি বলেন, যাঁরা এই ভাঙা রাস্তায় সাঁকো তৈরি করছেন তাঁদের জন্য দোয়া থাকল। তাঁদের এই কাজের সঙ্গে গ্রামের অন্য মানুষেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
২০১৩ সালে পূর্ব ইছলি গ্রামে উপজেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করে। সেতুটি ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন সেতুটির এক অংশের সংযোগ সড়কের সামান্য কিছু অংশ ভেঙে যায়।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীটারি ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহেল হাদী বলেন, ভাঙা সড়ক নির্মাণে এই মুহূর্তে বরাদ্দ নেই। এলাকার মানুষজন উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন। তিনিও সহযোগিতা করতে চেয়েছেন।