দেখে লিখতে না দেওয়ায় শিক্ষককে মারধর
পাবনায় পরীক্ষা চলাকালে খাতা দেখে লিখতে না দেওয়ায় এক কলেজশিক্ষককে মারধর করা হয়েছে। পরীক্ষার কক্ষে অনৈতিক সুবিধা না দেওয়ায় প্রতিহিংসাবশত তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষক। এই ঘটনার পেছনে ছাত্রলীগের ইন্ধন আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
হামলার শিকার ওই শিক্ষকের নাম মাসুদুর রহমান। তিনি পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। ওই হামলার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মাসুদুর রহমান মোটরবাইকে করে কলেজ থেকে বের হওয়ার পথে কলেজের প্রধান ফটকে তাঁকে থামানো হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে কয়েকজন যুবক তাঁর ওপর হামলে পড়ে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন। এরপর একজন পেছন থেকে এসে তাঁকে লাথি মারেন। অনলাইনে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে শিক্ষকসমাজ।
হামলার শিকার কলেজশিক্ষক মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ৬ মে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন। পরীক্ষা চলাকালে দুই ছাত্রী একে অপরের খাতা দেখার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। বিষয়টি নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই ছাত্রীর খাতা নিয়ে নেন তিনি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন দুই ছাত্রী। এর জের ধরে ১২ মে কলেজ ফটকে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়।
মাসুদুর রহমানের দাবি, ছাত্রলীগ নেতাদের ইন্ধনেই এই হামলা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন তিনি।
এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দিন বলেছেন, ‘আমি হামলাকারীদের চিনি না। ঘটনা সম্পর্কেও কিছু জানি না। খবর পেয়ে আমরা এসে তাঁকে রক্ষা করেছি। এখন রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে আমাকে উল্টো দোষ দেওয়া হচ্ছে।’
কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে একজন শিক্ষকের ওপর হামলা চালানোর ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল হক বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’