চরে লাল মরিচের হাসি
মাঠের পর মাঠ সবুজ খেত। তার ভেতর উঁকি দিচ্ছে লাল-সবুজ-কালচে মরিচ। কিষান-কিষানি বেছে বেছে লাল টুকটুকে পাকা মরিচ তুলছেন। মরিচের সেই লাল আভা ছড়িয়ে পড়ছে কৃষকের চোখে-মুখে।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদে বছরের পর বছর ধরে মরিচ চাষ হচ্ছে। মেঘনা নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে চাষ হয় এ ফসলের। এ মরিচ বিক্রির টাকায় অনেক কৃষকের সারা বছরের সংসারের খরচ জোগাড় হয়ে যায়।
কৃষকেরা জানান, কার্তিক মাসে মরিচের জমি তৈরি করেন তাঁরা। অগ্রহায়ণ মাসে লাগান বীজ। চলতি বৈশাখ মাসে শুরু হয়েছে মরিচ তোলা। এ সময় কাঁচা মরিচ বিক্রির পর, পাকা মরিচগুলো শুকানো হয়। শুকনো মরিচ সংরক্ষণ করে বছরের যেকোনো সময় বিক্রি করা যায়।
মেঘনার বড়কান্দা, লক্ষ্মণখোলা, মোহাম্মদপুর, বিনোদপুর, চরবিনোদপুর, করিমাবাদ, হিজলতলী, সেননগর, দড়িকান্দি, তালতলী, মানিকারচর, চন্দনপুর, শেখেরগাঁও ও ভাওরখোলা গ্রামের মাঠে মরিচের চাষ বেশি হয়।
এসব গ্রামের কৃষকেরা জানান, এ উপজেলার চরাঞ্চলে শত বছরের বেশি ধরে মরিচ চাষ করে আসছেন তাঁরা। কম পুঁজিতে বেশি লাভের কারণে চরে মরিচ চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। একজন কৃষক ১৫০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করতে পারলে, পরিবারের সারা বছরের সব ধরনের খরচের টাকা উঠে যায়। ভাওরখোলা গ্রামের আবদুল বারেক মিয়া, বড়কান্দা গ্রামের হানিফ মিয়া, লক্ষ্মণখোলা গ্রামের সামছুদ্দিন, চরপাথালিয়া গ্রামের নাছির উদ্দিন বলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে মরিচ চাষ করে আসছেন। চলতি বছর প্রতি ৩০ শতক জমিতে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। ফলন হয়েছে ৮ থেকে ১০ মণ। প্রতি মণ শুকনা মরিচের বর্তমান বাজারমূল্য ছয় হাজার টাকা।