জনপ্রশাসনে দলীয় ছায়া তৈরি হচ্ছে
গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থায় জনপ্রশাসনের ওপর রাজনীতির প্রভাব থাকবেই, কিন্তু সেটা কোনোভাবেই দলীয়করণের দিকে যাওয়া যাবে না। কিন্তু এখন অনেকেই মনে করেন জনপ্রশাসনেও দলীয় ছায়া তৈরি হচ্ছে। এর ফলে জন আস্থা, পেশাদারি এবং সার্বিকভাবে প্রশাসনের গুণগত মানের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আর দুর্নীতি অল্পবিস্তর সব সময়ই ছিল। কিন্তু জনপ্রশাসনে কার্যকর জবাবদিহির অভাবে এটা আরও বাড়ছে। জনপ্রশাসনে যখন রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ চলে, তখন আমলাতন্ত্রও সমঝোতা করে। এখন মাঠ প্রশাসনে এমন অভিযোগের কথা শোনা যায়। যদিও এটা ঠিক যে দুর্নীতি রোধ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সরকার জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলসহ বেশ কিছু নীতিমালা করেছে। কিন্তু সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে, তেমনটা মনে হচ্ছে না। ফলে এসব নীতিমালার কার্যকর সুফল পাওয়া যাচ্ছে তা–ও বলা যাবে না। এ জন্য এসব নীতিমালা যাতে বাস্তবায়ন হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে হবে। তা না হলে তাঁদের কর্মস্পৃহা কমে যাবে। কিন্তু সেই পদোন্নতি হওয়া প্রয়োজন পদের সংখ্যার ভিত্তিতে, যোগ্যতা ও মেধার মাপকাঠিতে।
সুশাসন নিয়ে উদ্বেগ আছে। এ জন্য সুশাসনের দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট সুশাসনের বিষয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করেছে, যা তারা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে দেখেছে। কিন্তু সেটি এখনো জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের সঙ্গে সমন্বয় করে সেটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এই কাজগুলো করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে।
সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান, অধ্যাপক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়