বিজিবি-র্যাব-পুলিশের অভিযানে পাঁচ ঘণ্টায় নিহত ৬
রাজধানীর ভাষানটেক, গাজীপুরের টঙ্গী এবং কক্সবাজারের টেকনাফ ও পেকুয়া উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ভাষানটেক ও পেকুয়ায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনজন, টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) গুলিতে দুজন ও টঙ্গীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হন। নিহত ছয়জন হত্যা, ছিনতাই, অবৈধ অস্ত্র রাখা ও মাদক পাচারের মতো অপরাধে জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেছে বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা থেকে আজ বুধবার ভোর ৫টার মধ্যে ওই ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঢাকা: র্যাব-১১–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী শামসের উদ্দিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে র্যাব-১১–এর একটি দল গতকাল রাত পৌনে ১২টায় মিরপুরের ভাষানটেকের মাটিকাটা এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালায়। ওই বাসায় নরসিংদী জেলায় পুলিশের তালিকাভুক্ত ১ নম্বর শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিকের লুকিয়ে থাকার তথ্য ছিল। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শফিক ও তাঁর সহযোগীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। ওই সময় শফিক গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে র্যাব শফিকের দুই সহযোগী ফারুক ও প্রদীপকে অস্ত্রসহ আটক করেছে।
পেকুয়া: র্যাব-৭ কক্সবাজারের অধিনায়ক মেহেদি হাসান জানান, আজ ভোর পাঁচটার দিকে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের জালিয়াপাড়া এলাকায় র্যাবের টহল দল ও উপকূলীয় জলদস্যুদের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে দুই জলদস্যুর গুলিবিদ্ধ লাশ এবং ৮টি অস্ত্র ও ২৬টি গুলি উদ্ধার করা হয়। নিহত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনি র্যাব।
টেকনাফ: টেকনাফ ২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোররাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় দিয়ে নাফ নদী সাঁতরে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে দুই পাচারকারী বাংলাদেশে ঢোকেন। এ সময় পাচারকারীরা বিজিবির টহল দলের উপস্থিতি টের পেয়ে বেড়িবাঁধ দিয়ে পালানোর চেষ্টা চালান। তাঁদের থামানোর জন্য বিজিবির টহল দল সংকেত দেয়। তবে সংকেত অমান্য করে তাঁরা পালাতে গেলে বিজিবি গুলি ছোড়ে। দুজনের মরদেহের সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার ইয়াবা পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ দুটি উদ্ধার করে।
বিজিবির ভাষ্যমতে, নিহত পাচারকারীদের কাছ থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার ইয়াবা পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তাঁদের পরনে থাকা টিশার্ট, হাফপ্যান্ট ও লুঙ্গি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা।
টঙ্গী: গাজীপুর মহানগর পুলিশের ডিসি (অপরাধ) মো. শরিফুর রহমান জানান, গতকাল মধ্যরাতের দিকে টঙ্গীর এরশাদনগর (পূর্ব থানা) এলাকা থেকে সন্ত্রাসী ও ‘কুখ্যাত’ ছিনতাইকারী কাউসারকে (২৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে কাউসারকে নিয়ে পুলিশ তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাতে যায় গাজীপুরা বাঁশপট্টি এলাকায়। সেখানে পৌঁছালে রাত দেড়টার দিকে পুলিশের কাছ থেকে কাউসারকে ছিনিয়ের নেওয়ার চেষ্টা করে তাঁর সহযোগীরা। ওই সময় কাউসারের সহযোগীদের সঙ্গে পুলিশের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে কাউসার গুলিবিদ্ধ হন, অন্যরা পালিয়ে যায়।
পুলিশের তথ্যমতে, গুলিবিদ্ধ কাউসারকে উদ্ধার করে প্রথমে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আজ ভোরে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক কাউসারকে মৃত ঘোষণা করেন।