ক্রুকে অস্ত্রধারী বলল, আমি বিমান ছিনতাই করব
বাংলাদেশ বিমানের নতুন উড়োজাহাজ ময়ূরপঙ্খী ১৪২ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে দুবাইয়ে রওনা দেয়। আজ রোববার বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। আকাশে ওড়ার পরপরই উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। পুরো কাজটি করেন অস্ত্রধারী এক ব্যক্তি।
বিমানটিতে থাকা একাধিক ক্রু ও যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
একজন ক্রু জানান, সাড়ে চারটায় কিছু সময় পর ময়ূরপঙ্খী আকাশে প্রায় ১৫ হাজার ফুট ওপরে দিকে উড়ে যাচ্ছিল। তখন উড়োজাহাজের ভেতরে যাত্রীদের আসনে থাকা এক ব্যক্তি উঠে ককপিটের দিকে আসেন। এ সময় ওই ব্যক্তি এক ক্রুর কাছে যান। কাছে গিয়ে তিনি ওই ক্রুকে ধাক্কা দেন এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি পিস্তল ও বোমাসদৃশ একটি বস্তু বের করে বলেন, ‘আমি বিমানটি ছিনতাই করব। আমার কাছে পিস্তল ও বোমা আছে। ককপিট না খুললে আমি বিমান উড়িয়ে দেব।’ এর মধ্যে অন্য কেবিন ক্রুরা ককপিটে থাকা পাইলট ও সহকারী পাইলটকে গোপনে সাংকেতিক বার্তা দেন যে, উড়োজাহাজে অস্ত্রধারী আছে, উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা হচ্ছে। ঠিক এ সময় উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম ও ঢাকার মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করছিল।
ওই ক্রু বলেন, উড়োজাহাজটি আকাশের ১৫ হাজার ফুটের কিছু ওপরে উড্ডয়ন করছিল। এর মধ্যে পাইলট মো. শফি ও সহকারী পাইলট মো. জাহাঙ্গীর চট্টগ্রামগামী উড়োজাহাজটির ককপিটের দরজা বন্ধ করে দেন এবং কৌশলে জরুরি অবতরণের জন্য চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বার্তা পাঠান। উড়োজাহাজে থাকা একটি সূত্র জানিয়েছে, ককপিটের দরজা না খোলায় অস্ত্রধারী ব্যক্তিটি চিৎকার করছিলেন। একপর্যায়ে ওই অস্ত্রধারী উড়োজাহাজের ভেতরে ‘বিস্ফোরণের’ মতো ঘটান। ততক্ষণে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তবে ওই অস্ত্রধারী ফ্লাইট স্টুয়ার্ট সাগরকে আটকে রেখেছে। উড়োজাহাজ অবতরণের পর কৌশলে উড়োজাহাজের ডানার পাশের চারটি ইমারজেন্সি গেট দিয়ে যাত্রীরা নেমে পড়েন।
উড়োজাহাজে থাকা এক যাত্রী জানিয়েছেন, তিনি নেমে আসা পর্যন্ত ক্রু সাগর ছাড়া ককপিটের ভেতরে তখন পর্যন্ত দুজন বৈমানিক ছিলেন।
বাংলাদেশ বিমানের একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৬২ আসনের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজে ইকোনমি ক্লাসে ১৩৩ জন ও বিজনেস ক্লাসে নয়জন যাত্রী ছিলেন। এ ছাড়া পাঁচজন ক্রু, এর মধ্যে দুজন নারী ছিলেন। ককপিটে দুজন পাইলট ছিলেন। উড়োজাহাজটির মডেল বোয়িং ৭৩৭-৮০০। উড়োজাহাজটি ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমানের বহরে যুক্ত করা হয়।