সরকারের উদ্দেশে গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সরকার মানুষের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি করেছে। মানুষ এটা নেবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে উপমহাদেশের খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ছেলে রাশেদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুতে গণফোরাম আয়োজিত এক শোকসভায় কামাল হোসেন এসব কথা বলেন।
কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকে মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে। গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করে এসেছি। ৩০ তারিখের নির্বাচনকে সবাই প্রহসন, নাটক বলেছেন। মানুষের প্রতি ভাঁওতাবজি বলা যেতে পারে। দুঃখজনক যে এগুলো কেন করতে হলো? কেন করতে হচ্ছে? পরের দিন সকালে বললেন আমি তো পাঁচ বছরের জন্য এসে গেছি।’ তিনি আরও বলেন, এতে ১৬ কোটি মানুষকে অপমান করা হচ্ছে। ১৬ কোটি মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করে এভাবে বলা সংবিধান লঙ্ঘন। তিনি বিশ্বাস করেন, ১৬ কোটি মানুষ এটা মেনে নেবে না। তাঁদের যা করণীয় আছে তাঁরা তা করবেন।
রাশেদ সোহরাওয়ার্দীর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে কামাল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে রাশেদ সোহরাওয়ার্দী স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রতিবছরই আমরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাব ও স্মরণ করব। তিনি তরুণ সমাজের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।’
জেএসডি সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা আ স ম আবদুর রব বলেন, রাশেদ সোহরাওয়ার্দীকে নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে, যাঁর বাবা গণতন্ত্রের মানসপুত্র। গণতন্ত্র কোথায়? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বরকে ঘৃণা এবং লজ্জা দিবস পালন করা উচিত। রব বলেন, দেশের মানুষ এখন বিসর্জন না দিয়ে অর্জন করতে চায়। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর মানুষ প্রতিবাদ করেনি জানিয়ে বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষের বিবেককে হত্যা করল, গণতন্ত্র হত্যা করল, দেশের একটা মানুষ প্রতিবাদ করল না কেন?’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সদ্য কারামুক্ত মইনুল হোসেন রাশেদ সোহরাওয়ার্দীকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, আমলাদের সহায়তায় জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দেশে আমলাতন্ত্র চলছে।
রাশেদ সোহরাওয়ার্দীর বাবার কথা স্মরণ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী আমাদের সামনে উদার গণতন্ত্রের আদর্শ রেখে গেছেন। রাজনীতিকদের মধ্যে আগের মতো উদার গণতন্ত্র দেখা যায় না। এখানে রাজনীতির নামে চলছে হিংসা, বিদ্বেষ।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সঞ্চালনায় শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চিকিৎসক জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন।