রাজশাহীর চারঘাট থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ধর্ষণ মামলার আসামি শাহজাহান গাজী (৬০) আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজশাহীর আমলি আদালত-১–এর বিচারক আবদুল্লাহ আল আমিন ভূঁইয়ার কাছে তিনি এই স্বীকারোক্তি দেন।
এক কিশোরীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া শাহজাহান গাজী বৃহস্পতিবার দোষ স্বীকার করে আদালতে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমি পাপ করেছি। আমার বিচার হওয়া উচিত।’ ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
শাহজাহান গাজী চারঘাটের শলুয়া সরকার পাড়া মসজিদের ইমাম এবং স্থানীয় ফতেপুর ফুরকানিয়া মাদ্রাসায় বাচ্চাদের আরবি পড়াতেন। চারঘাটের কানোছগাড়ী গ্রামে ২০ বছর ধরে তিনি বসবাস করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী তাঁর প্রতিবেশী।
স্থানীয় লোকজন জানান, শাহজাহান গাজী চারটা বিয়ে করেছেন। তার মধ্যে একজনকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। দুজন মারা গেছেন আর একজন তাঁর সঙ্গে রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার চারঘাট থানার পুলিশ শাহজাহান গাজীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালতের বিচারক তাঁকে তিন ঘণ্টা চিন্তা করার সময় দেন। তারপর বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আদালতে শাহজাহান গাজী তাঁর দোষ স্বীকার করেছেন।
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম কিশোরীর বাবার বরাত দিয়ে জানান, মেয়েটি ওই ইমামের কাছে আরবি পড়ত। মাঝেমধ্যে তিনি পড়ানোর অজুহাতে বাসায় ডাকতেন। তাঁরা সরল মনে কিশোরী মেয়েকে পাঠাতেন। কিন্তু ইমাম সরলতার সুযোগ নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন। বর্তমানে ওই কিশোরী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওসি জানান, মেয়েটির মা প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পেরে মানসম্মানের ভয়ে চেপে যান। পরে সন্দেহ হলে তিনি স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন তাঁর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। ৩ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি মেয়ের বাবা জানতে পারেন। পরের দিন তিনি চারঘাট থানায় মামলা করেন। গতকাল বুধবার বিকেলে পুলিশ উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে শাহজাহান গাজীকে গ্রেপ্তার করে।