নাজমুল হুদার জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই
দুর্নীতির মামলায় চার বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি পেয়েছেন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়কার যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা।
একই সঙ্গে আপিলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নাজমুল হুদাকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে আজ সোমবার এই আদেশ দেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে কারাগারে থাকা নাজমুল হুদার কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
আজ আদালতে নাজমুল হুদার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, মুনসুরুল হক চৌধুরী, সিগমা হুদা ও আশানুর রহমান। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে সিগমা হুদা বলেন, নাজমুল হুদার করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেছেন আদালত। তাঁকে আদালত জামিন দিয়েছেন। তাঁর জরিমানা স্থগিত করেছেন। তাঁর কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
আত্মসমর্পণ করার পর গত ৬ জানুয়ারি নাজমুল হুদাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-২ আদালতের বিচারক। এদিন আদালত নাজমুল হুদার জামিনের আবেদন নাকচ করেন। পরে নাজমুল হুদাকে কারাগারে নেওয়া হয়।
২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এই মামলায় নাজমুল হুদাকে সাত বছরের সাজা দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত। ২০১৭ সালে তাঁর সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট।
পেশাদার আইনজীবী থেকে নাজমুল হুদার রাজনীতিতে পদার্পণ ১৯৭৭ সালে, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের গঠিত জাগদলের মাধ্যমে। জাগদলের ধারাবাহিকতায় গঠিত হয় বিএনপি। নাজমুল হুদা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। পর্যায়ক্রমে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিভিন্ন মেয়াদে খাদ্য, তথ্য এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১০ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে নাজমুল হুদার টানাপোড়েন শুরু হয়। দল তাঁকে বহিষ্কার করে। সেই বহিষ্কারের আদেশের পরও বিএনপির পরিচয়েই রাজনীতিতে থাকার চেষ্টা করেন। তবে বেশি দিন নয়। ২০১২ সালের জুনে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। নাজমুল হুদার সর্বশেষ গঠিত দল ‘তৃণমূল বিএনপি’।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নাজমুল হুদা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেন। তবে এই জোট থেকে তিনি মনোনয়ন পাননি। পরে ঢাকা-১৭ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন তিনি।
আরও পড়ুন: