মা দিবসে অনন্য ১০ মাকে বিশেষ সম্মাননা

রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে সম্মাননা পাওয়া মায়েদের সঙ্গে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অন্যরা। ঢাকা, ১৩ মে। ছবি: প্রথম আলো
রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে সম্মাননা পাওয়া মায়েদের সঙ্গে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অন্যরা। ঢাকা, ১৩ মে। ছবি: প্রথম আলো

বিশ্ব মা দিবসে ১০ মাকে বিশেষ ‘গরবিনী মা সম্মাননা’ দিয়েছে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এই মায়েদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে তাঁদের সন্তানেরা এখন সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। আজ রোববার রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন সেন্টারে এই মায়েদের মেডেল, ক্রেস্ট, সনদ এবং বিভিন্ন উপহার দিয়ে সম্মাননা জানান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের মা মনোয়ারা বেগম, অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের মা পেয়ারা রহমান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আমেনা বেগমের মা জাহানারা বেগম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার রোগ বিভাগের অধ্যাপক মামুন আল মাহতাবের মা আয়েশা মাহতাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের মা রেজিয়া বেগম, ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজার মা হামিদা মুর্তজা বলাকা, কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের মা শোভা রাণী দে, অভিনেতা মোশাররফ করিমের মা মমতাজ বেগম, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের মা ছবি সাহা এবং প্রথম আলোর অদম্য মেধাবী বৃত্তিপ্রাপ্ত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মোখলেছুর রহমানের মা মনোয়ারা বেগম এবারের সম্মাননা পেয়েছেন।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মায়েদের ত্যাগ, দায়িত্বপালন, নিষ্ঠা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলেই আমরা আজ এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি।’ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হওয়ার পেছনে মায়েদের ভূমিকা আছে বলে উল্লেখ করে তিনি সব মাকে সম্মান জানানোর আহ্বান জানান।

মায়ের ‘দুষ্টু’ ছেলে হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করে অভিজ্ঞতার কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আজ আর মা নেই, কিন্তু চোখ বন্ধ করলেই মায়ের যে অবদান, তা উপলব্ধি করি।’

অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে পেয়ারা রহমান অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত হয়ে মায়ের পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাত্রা শুরু করেছে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে মায়েরা যে অবদান রাখছেন, তাঁর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার সময় এসেছে।

অনুষ্ঠানে সম্মাননা পাওয়া মা হামিদা মুর্তজা বলাকাও অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁর ছেলে মাশরাফি বিন মুর্তজা এক ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে মায়েদের শুভকামনা জানান।

অনুষ্ঠানে মা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিদ্যা সিনহা সাহা মিমসহ অনেকেই নিজের মায়ের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘মা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তাঁরা স্বীকারও করলেন, এই কথাটি আগে কখনোই তাঁরা সেভাবে প্রকাশ করতে পারেননি।’

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি প্রথম আলোর প্রধান বার্তা সম্পাদক শওকত হোসেন অর্থনীতিতে মায়েদের যে অবদান, তার থিওরি বা মডেল বের করার জন্য অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনিও জীবনের এ পর্যন্ত আসার পেছনে নিজের মায়ের অবদানের কথা উল্লেখ করেন এবং সব মা যাতে মৃত্যুর আগে সন্তানের সাফল্য দেখে যেতে পারেন, সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী। স্বাগত বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ‘গরবিনী মা সম্মাননা’-এর প্রধান উদ্যোক্তা চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘এবার পঞ্চমবারের মতো মায়েদের এ সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। মা ও সন্তানের বন্ধন অটুট থাকুক। বৃদ্ধাশ্রমে আছেন কোনো মা, তা আর শুনতে চাই না।’