চিকনগুনিয়ার প্রকোপ, ডেঙ্গু ও ইনফ্লুয়েঞ্জাও আছে

রাজধানীতে এডিস মশাবাহিত চিকনগুনিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরু না হলেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। একই সঙ্গে মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জাও দেখা দিয়েছে। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জনসচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে চিকনগুনিয়ার বিস্তার রোধে করণীয়-সংক্রান্ত সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল বিকেলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ১১ মে চিকিৎসকদের সঙ্গে আইইডিসিআরের কর্মকর্তাদের একটি সভা হয়। ওই সভায় চিকিৎসকেরা সরকারকে জানিয়েছিলেন, তাঁদের চেম্বারে চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগী বেড়েছে। একই সঙ্গে ডেঙ্গুও দেখা দিয়েছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, এপ্রিল-মে-জুন মাসে সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা দেখা দেয়। সাধারণ জ্বরেও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের ডিন এ বি এম আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এখন চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীই বেশি আসছে। সাধারণ জ্বর ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী কম।
বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে গতকাল সভা ডেকেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকনগুনিয়া ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবের কোনো আশঙ্কা নেই। সরকার এ ক্ষেত্রে বরাবরের মতো প্রস্তুত। তিনি জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে, মশা নিধনই এই রোগ প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায়।
ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা। সভা শেষে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। এডিস মশা ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া ছড়ায়। আমরা মশার উপদ্রব কমানোর ওপর জোর দিয়েছি। এ জন্য জনসচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে সভা করবে আইইডিসিআর।
অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গুতে রক্তে প্লাটিলেট কমে যায়, রক্তক্ষরণ হয়। চিকনগুনিয়ায় তীব্র জ্বর হয়, শরীরে বিশেষ করে হাড়ের জোড়ায় প্রচণ্ড ব্যথা হয় এবং শরীরে র্যা শ ওঠে। তিনি বলেন, মশা থেকে দূরে থাকতে হবে। এই মশা দিনে কামড়ায়। দিনে ঘুমালে মশারি ব্যবহার করতে হবে। ঘরের কোনো পাত্রে যেন পানি না জমে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। পানিতে এরা বংশবিস্তার করে। আর সিটি করপোরেশনকে মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক বলেন, জ্বর বেশি হলে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।