ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার রায় গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্র দপ্তর
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, সেটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা এক মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসসহ চারজনকে গত সোমবার (১ জানুয়ারি) ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূসের সাজার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, নতুন বছরের প্রথম দিন নোবেলজয়ী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম পাওয়া অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে সাজার রায়ের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের প্রতিক্রিয়া কী? বাংলাদেশে আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য সৃষ্ট চ্যালেঞ্জকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কীভাবে দেখে? বিশেষ করে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ১০ বছরের কারাদণ্ড; অসংখ্য বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মীদের একই রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আরও বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার মতো বিষয়কে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কীভাবে দেখে?
জবাবে মিলার বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। এ অবদানের জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারসহ অন্যান্য অনেক আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে রায় হওয়া মামলাটি তাঁরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। রায় নিয়ে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের নজরে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে তাঁরা বাংলাদেশ সরকারকে একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনিপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য উৎসাহিত করছেন। তাঁরা যেকোনো পরবর্তী ঘটনা নিবিড়ভাবে অনুসরণ করে যাবেন।
আরেক প্রশ্নে বলা হয়, এ সপ্তাহের শেষ দিন বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। নির্বাচনে ডামি প্রার্থী ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকাশ্য নির্দেশনা দিয়েছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গঠনমূলক পরামর্শ উপেক্ষা করেছেন। মার্কিন সরকার কি এমন একটি ডামি নির্বাচনকে বৈধতা দেবে? যদি তা না হয়, তাহলে বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের আগামী সরকারের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করছে? গত সপ্তাহান্তে বিবিসি ‘বাংলাদেশ: যে নির্বাচন এক নারীর প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন করেছে।
জবাবে মিলার বলেন, তাঁর মনে হয়, তিনি এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর আগে দিয়েছেন। কিন্তু নতুন বছর হওয়ায় তিনি আবার উত্তর দেবেন। তাঁরা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থন করেন। তাঁরা নিবিড়ভাবে এ নির্বাচনের দিকে নজর রাখবেন। তবে কোনো ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র কী ব্যবস্থা নিতে পারে বা পারে না, সে বিষয়ে তিনি আগে থেকে কিছু বলবেন না।