আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এলএনজি ব্যবসায় চক্র, নেপথ্যে নসরুল হামিদ
৬ বছরে খরচ ১ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা।
খোলাবাজার থেকে কেনা হয়েছে ৭৪টি কার্গো।
৬০ শতাংশ সরবরাহ করেছে সিঙ্গাপুরের দুই কোম্পানি।
গত অর্থবছরে খরচ ৪২ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা।
খোলাবাজার থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঘুরেফিরে চারটি কোম্পানি বেশি কাজ পেয়েছে। এর মধ্যে দুটি কোম্পানি কাজ পেয়েছে সরকার পতনের পরও। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এলএনজি ব্যবসার এই চক্র মূলত গড়ে উঠেছে সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের মাধ্যমে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ছয় অর্থবছরে এলএনজি আমদানির (জিটুজি ও খোলাবাজার) পেছনে সরকার খরচ করেছে ১ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গত অর্থবছরে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা।
দেশে প্রথমবারের মতো এলএনজি আমদানি শুরু হয় ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে। প্রথম দিকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির অধীনে সরকারি পর্যায়ে (জিটুজি) আমদানি হয়। এর পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে খোলাবাজার থেকে আমদানি শুরু হয় ২০২০ সালের দিকে। তখন থেকে ঘুরেফিরে বেশি কাজ পাওয়া চারটি কোম্পানি হলো সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া ও গানভর, সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকসিলারেট এনার্জি। পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, ৬০ শতাংশের বেশি এলএনজি সরবরাহ করেছে ভিটল এশিয়া ও গানভর। এই দুটি কোম্পানির সঙ্গে নসরুল হামিদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও পারিবারিক কোম্পানির ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এলএনজি সরবরাহে কোনো কাজ পায়নি ভিটল এশিয়া। তবে অক্টোবরে দুটি করে মোট চারটি এলএনজি কার্গো সরবরাহের কাজ পেয়েছে টোটাল ও গানভর।
বিতর্কিত কোম্পানি
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভিটল এশিয়া, গানভর ও টোটালের ব্যবসা নিয়ে বিশ্বে বিতর্ক আছে। দেশে এলএনজি আমদানি শুরুর পর তারা এখানে ব্যবসা শুরু করে। এর মধ্যে টোটালের ঢাকায় কার্যালয় রয়েছে। আর ভিটল এশিয়া ও গানভরের স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন এজাজুর রহমান নামের এক ব্যক্তি। তিনি ওকিইউ ট্রেডিংয়েরও স্থানীয় প্রতিনিধি বলে জানা গেছে। দুটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির (জিটুজি) আওতায় ওমানের ওকিইউ ট্রেডিং ও কাতার এনার্জি থেকে এলএনজি আমদানি করে বাংলাদেশ। এজাজুর দীর্ঘদিন ধরে ভিটল এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরকারকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে আসছেন। বিগত সরকারের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তাঁকে এলএনজি ব্যবসায় যুক্ত করেন বলে অভিযোগ করেছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তরা। নসরুল হামিদ ২০১৪ থেকে টানা তিন দফায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
গানভর, ভিটল ও টোটাল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করে। এর মধ্যে গানভর ও ভিটলের সিঙ্গাপুরের নিবন্ধিত কোম্পানি থেকে এলএনজি আমদানি করে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন করাপ্ট পলিসিস অ্যাক্ট লঙ্ঘনের দায়ে বিভিন্ন সময় শাস্তির মুখোমুখি হয়েছে ভিটল, গানভর ও টোটাল। ব্রাজিল, ইকুয়েডর ও মেক্সিকোতে সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে কাজ নেওয়ার দায়ে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বড় রকমের জরিমানা দিতে হয়েছিল ভিটলকে। ইকুয়েডরে ঘুষ দিয়ে কাজ নিয়েছিল গানভর। এ জন্য গত মার্চে তাদের ৬৬ কোটি ডলার জরিমানা করে যুক্তরাষ্ট্র। একই অপরাধে টোটালেরও ২০১৩ সালে ১৩ কোটি ডলার জরিমানা হয় যুক্তরাষ্ট্রে।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) নির্দেশনায় এলএনজি আমদানির কাজটি করে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। এ দুটি সংস্থার দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এজাজুরের বাণিজ্যিক কার্যালয়টি কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলার প্রধান কার্যালয় পেট্রো সেন্টারের বিপরীতে অবস্থিত একটি ভবনে। অভিযোগের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি আত্মগোপনে আছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
‘প্রতিমন্ত্রীর’ মদদে সিঙ্গাপুরের দুই কোম্পানি
খোলাবাজার থেকে এলএনজি আমদানি করতে দেশে তালিকাভুক্ত কোম্পানি আছে ২৩টি। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এমনভাবে এই তালিকা করা হয়েছে, যাঁদের অনেকে দরপত্রে অংশ নিতেন না। শুরুতে কেউ কেউ অংশ নিলেও শেষের দিকে তাঁরাও সরে যান। বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে ধারণা ছিল, দরপত্রে অংশ নিলেও তারা কাজ পাবে না। বরং নসরুল হামিদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোই কাজ পাবে। দরপত্রের তথ্য অনুসন্ধান করেও এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, গত ২০ অক্টোবর পর্যন্ত খোলাবাজার থেকে মোট ৭৪টি এলএনজি কার্গো কেনা হয়েছে। এর মধ্যে ভিটল একাই সরবরাহ করেছে ৩০টি। গানভর ও টোটাল সরবরাহ করেছে যথাক্রমে ১৫ ও ১৪টি কার্গো। ১০টি কার্গো সরবরাহের কাজ পেয়েছে অ্যাকসিলারেট এনার্জি। এওটি ট্রেডিং ১৭টি দরপত্রে অংশ নিলেও কাজ পেয়েছে তিনটির। বাকি দুটি কার্গো সরবরাহ করেছে জাপানের জেরা ও কাতার এনার্জি।
ভিটলের সঙ্গে নসরুল হামিদের যোগসূত্রতা খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালে পাওয়ারকো ইন্টারন্যাশনাল নামে ঢাকায় একটি কোম্পানি নিবন্ধিত হয়। এ কোম্পানির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, পাওয়ারকো এলপিজি ও এলএনজি সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ খাতে ব্যবসা করে। সিঙ্গাপুরেও তাদের একটি বাণিজ্যিক কার্যালয় আছে। ভিটল এশিয়ার সঙ্গে অংশীদারত্ব আছে তাদের।
যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধন পরিদপ্তর সূত্র বলছে, মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী ও ভারতীয় নাগরিক নাবিল খানের অংশীদারত্বে পাওয়ারকো নিবন্ধন নেয়। কামরুজ্জামান নসরুল হামিদের মামা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কামরুজ্জামানকে সরিয়ে কোম্পানির অংশীদারত্বে আনা হয় মো. মুরাদ হাসানকে। একই সঙ্গে কামরুজ্জামানের বদলে মুরাদকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় বিতর্ক এড়াতে কামরুজ্জামানকে সরানো হয় কোম্পানি থেকে। নাবিল খান হলেন নসরুল হামিদের বন্ধু। নিবন্ধনে নাবিলের দুবাইয়ের ঠিকানা দেওয়া আছে। মুরাদ হাসান নসরুল হামিদের পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হামিদ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার আগে হামিদ গ্রুপের ব্যবসা নিজেই দেখতেন নসরুল। এরপর তিনি তাঁর ছোট ভাই ইন্তেখাবুল হামিদকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক করেন। এলএনজির ব্যবসায় এজাজুরের সঙ্গে ইন্তেখাবুলের যুক্ততা থাকার অভিযোগ আছে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, কামরুজ্জামান, নাবিল খান, মুরাদ হাসান ও ইন্তেখাবুল আত্মগোপনে আছেন। অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশে এলপিজি টার্মিনালের কাজ পেতে ভিটল এশিয়া, জাপানের মারুবেনি করপোরেশন ও পাওয়ারকো মিলে একটি যৌথ কনসোর্টিয়াম গড়ে তোলে। টার্মিনাল নির্মাণে তাদের সঙ্গে ২০২১ সালের মার্চে একটি সমঝোতা স্মারকও সই করেছিল বিপিসি। টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে পরামর্শক নিয়োগ করে বিপিসি। সম্ভাব্যতা যাচাই করার কথা ছিল এ বছর। এখন এটির কাজ থেমে আছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে নসরুল হামিদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন বলে জানা গেছে।
তালিকায় থাকলেও অংশ নেয় না
খোলাবাজার থেকে এলএনজি কিনতে ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর ৮টি বৈশ্বিক কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে শুধু জাপানি কোম্পানি জেরা একবার দরপত্রে অংশ নিয়ে এক কার্গো এলএনজি সরবরাহ করেছে। ইতালির ইনি স্পা একটিতে ও যুক্তরাজ্যের চেনিয়ার মার্কেটিং চারটিতে অংশ নিয়ে কোনো কাজ পায়নি।
২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আরও ছয়টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়। এর মধ্যে আছে সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাকসিলারেট এনার্জি। ২০২১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তালিকাভুক্ত হয় সিঙ্গাপুরের গানভর ও সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস গ্যাস। ২০২৩ সালে যুক্ত হয় আরও সাতটি কোম্পানি। সবশেষ চলতি বছরের ৭ মার্চ যুক্ত হয় ওমানের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড। কোম্পানিটি তিনটি দরপত্রে অংশ নিলেও কাজ পায়নি।
কয়েক বছর ধরে নিয়মিত গ্যাস-সংকটে ভুগছে দেশ। দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। ২৯০ থেকে ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে এলএনজি সরবরাহসক্ষমতা দিনে ১১০ কোটি ঘনফুট। এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ৯০ কোটি ঘনফুটের একটু বেশি।
ভূতত্ত্ববিদ বদরূল ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, আমদানি করলে কমিশন-বাণিজ্যের সুযোগ থাকে। তাই দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান না করে আমদানি বাড়ানো হয়েছে। আমদানির ক্ষেত্রেও জাতীয় স্বার্থ দেখা হয়নি। ব্যক্তিস্বার্থে বিশেষ কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন যথাযথভাবে করা হলে গ্যাস আমদানির কোনো দরকার হবে না।
পুরোনা তালিকা নতুন করে অনুমোদন
পেট্রোবাংলা ও আরপিজিসিএলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, এলএনজি কিনতে উন্মুক্ত দরপত্র করার সুযোগ নেই। তাই যাদের সঙ্গে ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি আছে, তাদের থেকেই দর নিতে হচ্ছে। জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইন স্থগিত করলেও পুরোনো তালিকা ধরে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
দরপত্র ছাড়া কাজ করতে দ্রুত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ (বিশেষ বিধান) আইন করেছিল বিগত সরকার। এ আইনের কোনো সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, এমন বিধানের কারণে এটি দায়মুক্তি আইন হিসেবে পরিচিত। সমালোচনা সত্ত্বেও দফায় দফায় এ আইনের মেয়াদ বাড়িয়েছে বিগত সরকার। খোলাবাজার থেকে এলএনজি কিনতে ২৩টি কোম্পানির সঙ্গে ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিও (মাস্টার সেলস অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট) করা হয় বিশেষ বিধান আইনে। এলএনজি কিনতে চাইলে এসব কোম্পানির মধ্য থেকে আগ্রহীরা দর প্রস্তাব করে। যে সবচেয়ে কম দাম প্রস্তাব করে তাকে ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশেষ বিধান আইন স্থগিতের ঘোষণা দেয় গত ১৮ আগস্ট। এতে বলা হয়, এ আইনের অধীনে ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকবে। তবে ইতিমধ্যে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় গৃহীত সব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এরপর খোলাবাজার থেকে এলএনজি কিনতে পুরোনো ২৩টি কোম্পানির তালিকা গত ৪ সেপ্টেম্বর নতুন করে অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, ঘুরে ফিরে কয়েকটি কোম্পানির এলএনজি সরবরাহের বিষয়টি জানা আছে। এ কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দরপত্র আহ্বান করে নতুন তালিকা তৈরি করা হবে। তবে আপাতত গ্যাস-সংকট ঠেকাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা বিগত সরকারের পুরোনো তালিকা অনুমোদন করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকে এলএনজি আমদানির বিরোধিতা করে আসছেন। তাঁরা বলছেন, দেশে সম্ভাবনা থাকার পরও গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দেয়নি বিগত সরকার। এলএনজি আমদানির টার্মিনাল, সরবরাহকারী সবার সঙ্গেই চুক্তি করা হয়েছে বিশেষ আইনে।
দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, শুরুতেই দায়মুক্তি আইন করে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ বন্ধ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এলএনজি কিনতে ২৩টি কোম্পানির লোক দেখানো তালিকা করলেও ঘুরেফিরে কয়েকটি কোম্পানি কাজ পেয়েছে। বাকিরা দরপত্রে অংশও নেয়নি। তার মানে এখানে একটা চক্র কাজ করেছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ে পরিবর্তন হলেও কাঠামোর পরিবর্তন হয়নি। তাই সুবিধাভোগীরা এখনো সুবিধা নিচ্ছে। সরকারের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।