সংসদ নির্বাচন
বাছাইয়ে বৈধ হওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধেও আপিল হচ্ছে
গতকাল পর্যন্ত ইসিতে আপিল করেছেন ১৮৩ জন। ১০-১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে ইসি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আরও ১৪১ জন প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেছেন। বেশির ভাগ আপিল করেছেন নিজের প্রার্থিতা ফিরে পেতে। আবার বাছাইয়ে বৈধ হওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধেও আপিল হচ্ছে। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইসিতে আপিল করা যাবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকসহ তিনজনের মনোনয়নের বৈধতার বিরুদ্ধে গতকাল বুধবার ইসিতে আপিল করা হয়েছে।
বরিশাল-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেন ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।
জাহিদ ফারুকের পক্ষে কে বি এস আহমেদ কবির গতকাল ইসিতে গিয়ে আপিলটি দাখিল করেন। কে বি এস আহমেদ কবির বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতার সমর্থনকারী। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁর দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। এ ছাড়া তাঁর স্ত্রীর নামে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি এবং রাজধানীতে সাদিকের নামে প্লট থাকলেও এসব তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেননি।
বৈধ প্রার্থীর বিরুদ্ধে আপিল
■ বরিশাল-৫ আসন: স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।
■ যশোর-৪ আসন: আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক।
■ ময়মনসিংহ-৮ আসন: স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদ হাসান।
যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রনজিত কুমার রায়। এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন রনজিত। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
ময়মনসিংহ-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদ হাসানের মনোনয়নের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেছেন ফখরুল ইমাম। তিনি এই আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য। এবারও তিনি ওই আসন থেকে নির্বাচন করছেন।
এই তিনটির বাইরে গতকাল দাখিল হওয়া আপিলগুলো হয়েছে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য। গতকাল নিজের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ইসিতে আবেদন করেন নেত্রকোনা-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। সমর্থনসূচক ১ শতাংশ ভোটারের সইয়ে গরমিলের কারণে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর মনে হয়েছে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনের বিধানটি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দূরে রাখা বা নির্বাচন করতে না দেওয়ার একটি কৌশল। তিনি মনে করেন, বিধানটি পরিবর্তন হওয়া উচিত।
নেত্রকোনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শফী আহমেদও প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন। এ ছাড়া বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ইসিতে আপিল করেন আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।
আপিল করার পর হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, ছোটখাটো ভুল হয়েছে। তাই তিনি মনে করেন, আপিলে ইসি থেকে প্রার্থিতা ফেরত পাবেন।
আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। ৩০ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। এরপর ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ৫ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে আপিল। সব মিলে এখন পর্যন্ত ইসিতে আপিল করেছেন ১৮৩ জন। ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করবে ইসি।