ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, ‘এক শ ভাগ গ্যারান্টি দিলাম। আপনারা ১৭ তারিখের নির্বাচন দেখেন। নিরপেক্ষতার প্রমাণ পান কি না। যদি না পান, বলবেন, ডিএমপি কমিশনার হিসেবে নাকে খত দিয়ে চলে যাব।’
আজ মঙ্গলবার ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে ১৭ জুলাই। এই আসনে ভোট হবে কাগজের ব্যালটে। ভোটকেন্দ্রে স্থাপন করা হবে সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরা। এই নির্বাচনে প্রার্থী সাতজন। গত ২৬ জুন প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত আজকের সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, আনিছুর রহমান, ইসি সচিব জাহাংগীর আলম ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান। সভায় ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি, গোয়েন্দা বাহিনীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইসি সচিব ও ডিএমপি কমিশনার। অতীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার গোলাম ফারুক বলেন, ‘কারা এই প্রশ্ন করেন? আগামী ১৭ তারিখের নির্বাচনে দেখেন।
ঢাকা-১৭ আসনে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নিরাপত্তা দেওয়ার সক্ষমতা ডিএমপির আছে। সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে পুলিশ।’
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনসহ ৭৫টি জায়গায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করতে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকা-১৭ আসনকে গুরুত্ব দিচ্ছে; কারণ, ঢাকা মহানগরীর ভেতরে নির্বাচন হবে। ব্যালটে নির্বাচন হবে। ঢাকা-১৭ আসনে তিনটি বিষয় কূটনৈতিক এলাকা, ধনী ও বস্তি এলাকা মাথায় রেখে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, পুলিশের প্রতি ইসির শতভাগ আস্থা আছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে।
গত ১৫ মে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা যাওয়ার পর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
রাজধানীর গুলশান, বনানী, ভাষানটেক থানা ও সেনানিবাস এলাকা নিয়ে এই আসন গঠিত।
ইসি সূত্র জানায়, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত হাবিবুল আউয়াল কমিশন প্রায় ৮০০ নির্বাচন পরিচালনা করেছে। এসব নির্বাচনের বেশির ভাগই হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনকে নিজেদের জন্য একধরনের পরীক্ষা হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই আসনে ভোট হবে কাগজের ব্যালটে। মাস ছয়েকের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনেও ভোট হবে ব্যালটে। এর আগে এই উপনির্বাচন থেকে ব্যালটে ভোটের অভিজ্ঞতা নিতে চায় ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, ঢাকা-১৭ আসনটি রাজধানীতে হওয়ায় এই উপনির্বাচনকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে ইসি।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এই আসনের ভোটে সবার নজর থাকবে। কোনো ধরনের অনিয়ম হলে সেটি প্রচার পাবে বেশি। ঢাকা-১৭ আসনের ভোটে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতজন করে সদস্য থাকবেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২১ জন করে সদস্য মোতায়েনের প্রস্তাব করা হয়েছে।