ভারতের ঘনিষ্ঠতম প্রতিবেশী বাংলাদেশ। এই ঘনিষ্ঠতা গত ১৫ বছরের। বেড়েছে পারস্পরিক নির্ভরতা। কোনো দেশই চাইবে না বন্ধুত্ব নষ্ট হোক। সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ুক। স্বাভাবিকভাবে ভারতও তা চায় না। ভারত চায়, বাংলাদেশে গণতন্ত্র অব্যাহত থাকুক। দেশটা আরও সমৃদ্ধিশালী হোক। অসাম্প্রদায়িক থাকুক। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকুক।
ভারত গণতন্ত্রকে সব সময় সমর্থন জানিয়ে এসেছে। সব সময় চেয়ে এসেছে গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হোক। বাংলাদেশের নির্বাচনও সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হোক, সেটাই ভারতের কাম্য। তেমন নির্বাচন করার নিদর্শনও বাংলাদেশে রয়েছে। কাজেই এই বিষয়ে সন্দেহ করা অর্থহীন।
সেই সন্দেহে অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করবে, সেটা ভারত কখনো নীতিগতভাবে সমর্থন বা অনুমোদন করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রকে সে কথা এর আগেও ভারত জানিয়ে দিয়েছে। পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বেশ বোঝা যাচ্ছে, শুক্রবারের বৈঠকেও দ্ব্যর্থহীনভাবে তা জানিয়ে দেওয়া হলো।
দক্ষিণ এশিয়া রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল থাকা ভারতের পক্ষে খুবই জরুরি। বাংলাদেশের পক্ষেও। কারণ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশ প্রায় সর্বস্তরে উন্নতি করছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সার্বিক উন্নয়নেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সেটা সম্ভবপর হয়েছে গণতন্ত্রের চর্চায় ধারাবাহিকতা এসেছে বলে।
সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার নিদর্শন এই দেশে রয়েছে। আগামী নির্বাচনও তেমনভাবে স্বতঃস্ফূর্ত হবে না, এমন আশঙ্কা অহেতুকই শুধু নয়, কোনো গণতান্ত্রিক দেশের পক্ষে অসম্মানেরও। তা ছাড়া ভারত কখনো চায় না অন্য কোনো দেশ কারও ওপর অকারণ চাপ সৃষ্টি করুক।
ভারত যেমন নিজের দেশে কারও হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করে না, তেমনি তৃতীয় কেউ কারও ওপর চাপ সৃষ্টি করুক, সেটাও অনুমোদন করা ভারতের পক্ষে অসম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত বারবার এই কথা বোঝাতে চেয়েছে। এবারেও তা বোঝানো হলো। যুক্তরাষ্ট্র বুঝবে কি না, তাদের ব্যাপার।
শ্রীরাধা দত্ত, অধ্যাপক, ও পি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি