উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসছে শীত, শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তি
পৌষের দ্বিতীয়ার্ধে এসে দেশে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বিশেষ করে উত্তরের জেলাগুলোতে জেঁকে বসছে শীত। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিম হিম বাতাস। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে।
গতকাল বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে, ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল উত্তরের জেলাগুলোতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
দেশের সর্ব উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গতকাল দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া গতকাল কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১১, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১২ দশমিক ৪, রংপুরে ১২ দশমিক ৫ ও বগুড়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার জেলেপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিরন বেগম বলেন, ‘নদীর বাতাসোত ঠান্ডাতে হাত-পাও কোঁকড়া নাগোচে বাবা। হামারতো ল্যাপ-তোশব (লেপ-তোশক) নাই। রাইতোত পাতলা ক্যাতাটা (কাঁথা) গাওত বরফের মোতন ঠান্ডা হয়। কোঁকড়া নাগি সুতি (শুয়ে) থাকো। কনতো, রোইদ (রোদ) উঠপে কোন দিন?’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ঘন কুয়াশা আর হিমালয় থেকে সরাসরি আসা হিমবায়ুর কারণে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। আকাশে হালকা মেঘ রয়েছে। সেই সঙ্গে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ভূপৃষ্ঠে সূর্য তার তীব্রতা ছড়াতে পারছে না। এ জন্য তাপমাত্রা কমে গেছে। এ মাসে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।
শীত জেঁকে বসায় শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। পঞ্চগড় পৌরসভার মিলগেট এলাকায় আলুখেতে সাথি ফসল হিসেবে আখ রোপণ করছিলেন দিনমজুর আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আইজকা সবচেয়ে বেশি কুয়াশা পইরছে। শিলশিল করে একখান বাতাস আসেচে। মাটিখান এত ঠান্ডা, খালি পায়ে থাকা যায় না। ঠান্ডা মাটিখানোত পাওলা (পাগুলো) খালি পটপটাছে।’
এ বছর শীত আরও জেঁকে বসতে পারে বলে জানালেন বগুড়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এতে বাড়তে পারে শীতের তীব্রতা। হাড় কাঁপানো শীত থাকবে জানুয়ারি মাসজুড়ে।’
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা]