জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনে অংশ নেবেন ৫০০ শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠক, শুরু ২৩ জানুয়ারি

জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারাছবি: প্রথম আলো

২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন। এতে অংশ নেবেন দেশের নানা অঞ্চল থেকে আসা ৫০০ জনের বেশি শিল্পী, সংস্কৃতিকর্মী ও সংগঠক।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় এসব তথ্য। এতে আরও জানানো হয়, এবারের সম্মেলনে জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের ৪৩তম অধিবেশন হবে। সব আয়োজন হবে ধানমন্ডির ছায়ানট সাংস্কৃতিক ভবন মিলনায়তনে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শিল্পী তানিয়া মান্নান। তিনি জানান, ২৩ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টায় বোধন সংগীতের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে। এবারের বোধন সংগীত হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘এই কথা ধরে রাখিস-মুক্তি তোরে পেতেই হবে’ গানটিকে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন সংগীতগুণী ফাহমিদা খাতুন। বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন।

সম্মেলনে সকাল, বিকাল ও সন্ধ্যায় নানা আয়োজন থাকছে। তিন দিনের সান্ধ্য-অধিবেশন সাজানো হয়েছে গীতি-আলেখ্য, রবিরশ্মি, আবৃত্তি, পাঠ, নৃত্য ও গান দিয়ে। রয়েছে গুণীজনের সুবচন। অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন আলোচনা হবে ‘বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গে। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন অধ্যাপক ফকরুল আলম। এই আলোচনা অংশে সভাপতিত্ব করবেন রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতি মফিদুল হক। বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষে বরাবরের মতো প্রকাশিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির নানা দিক নিয়ে বিশিষ্টজনের লেখা প্রবন্ধের সংকলন ‘সংগীত সংস্কৃতি’।

সংবাদ সম্মেলনে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ‘শুধু অন্তর্বর্তী সরকার নয়, এখন অন্তর্বর্তী সময়কাল চলছে। ৫ আগস্টের পর যেমন অনেক নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, একই সঙ্গে আবার আশঙ্কাজনক ঘটনাও ঘটছে। রবীন্দ্রনাথ, লালন, জয়নুলের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘটনা থেকে আশঙ্কা করি, একটি প্রভাবশালী মহল আছে যারা বাঙালির সংস্কৃতির শেকড় ধ্বংস করতে চায়।’

সারওয়ার আলী আরও বলেন, ‘জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যে কৌশলী প্রকাশ দেখি, তাতে সংশয় আরও বাড়ে। তাই এই সময়ে রবীন্দ্রনাথকে অবলম্বন করা আরও বেশি জরুরি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতি শিল্পী লাইসা আহমদ লিসা, আমিনুল হক বাবুল ও বুলবুল ইসলাম। তাঁরা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তাঁরা জানান, রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনের অংশ হিসেবে আয়োজনের তৃতীয় দিন বিকেলে শ্যামলীর এস ও এস শিশুপল্লিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে।

আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত দেশের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গী। শুদ্ধ করে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করানোর জন্য, গানটির ভাবার্থ অনুভব করানোর জন্য সাত হাজার শিক্ষক নিয়ে কর্মশালা করেছে রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ।