৯৯৯-এ সেবা কিছুটা বেড়েছে
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশনির্ভর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কার্যক্রমে ধস নেমেছিল। লোকবল সংকটে সেবাপ্রত্যাশী মানুষের বেশির ভাগ কল গ্রহণ (রিসিভ) করা যায়নি। আবার যাঁদের কল ধরা হয়েছিল, তাঁদের সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি থানায় পুলিশ না থাকায়। তবে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থানাগুলোতে পুলিশ ফিরে আসতে শুরু করায় ৯৯৯-এ কলের বিপরীতে সেবা কিছুটা বেড়েছে।
স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে আসতে ৯৯৯-এর সব জনবলকে আজ সোমবার রাতের মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ৯৯৯ স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, আজ কলের ভিত্তিতে সেবা দেওয়ার হার তুলনামূলক বেড়েছে। তবে এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। কারণ, ৯৯৯-এর জনবল পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের। ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটায় নিরাপত্তার কথা ভেবে ৯৯৯-এ জনবল কমে গিয়েছিল। বেশির ভাগ পুলিশ সদস্য ঢাকার বাইরে নিরাপদ স্থানে চলে গিয়েছিলেন। ১০০টি ওয়ার্ক স্টেশনের জায়গায় ১০টি স্টেশন দিয়ে কাজ চালাতে হয়েছে। কল ধরার লোক ছিল না। আর লোকজন সেবা চাইলেও থানায় পুলিশ না থাকায় তা দেওয়া যায়নি।
মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ আরও বলেন, আজ ১৫টি স্টেশনের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। আজ রাতের মধ্যে ৯৯৯ কার্যক্রমের সব জনবলকে কাজে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাল সকাল থেকে ৯৯৯ স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরবে বলে আশা করা যায়।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত হয়। ৯৯৯-এর তথ্য অনুসারে, স্বাভাবিক সময়ে দিনে গড়ে ২০ থেকে ২২ হাজার কল আসে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কলের সংখ্যা দিনে ৩০০ থেকে ৫০০-তে নেমে আসে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে আজ বেলা ২টা পর্যন্ত ২ হাজার ৬৩৬টি কল ধরা হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে ১৪ ঘণ্টায় সাড়ে ১২ হাজারের মতো কলের বিপরীতে সেবা দেওয়ার কথা। গত ১৪ ঘণ্টায় যেসব কল এসেছে, তার বিপরীতে ৪৯টির ক্ষেত্রে পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস পাঠিয়ে সেবা দেওয়া হয়েছে। এই ৪৯টির মধ্যে ৪৫টি পুলিশের সেবা, ২টি ফায়ার সার্ভিস ও ২টি অ্যাম্বুলেন্স সেবা।
৯৯৯-এ ১ মিনিটে ১২০টির মতো কল গ্রহণ করার ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাভাবিক কার্যক্রম চলাকালে প্রতি পালায় ৮০ জন কল গ্রহণকারী (কল টেকার) কল গ্রহণ করেন। দ্বিতীয় স্তরে কলের বিষয়ে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে কি না, তা দেখেন ১৬ জন (ডিসপ্যাচার)। আর তৃতীয় স্তরে পুরো প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করেন চারজন (সুপারভাইজার)।