মতিউর নিয়ে মুখে কুলুপ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সরিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান অফিসে যাচ্ছেন না। তিনি কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন কি না, ছুটি নিয়েছেন কি না, সে বিষয়ে মুখ খুলছেন না বিভাগটির কেউ।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে আজ বুধবার বিভাগটির অধীন চারটি সংস্থার সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। সেই অনুষ্ঠানেও যাননি মতিউর।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠান এনবিআর, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনাল এবং ট্যাক্সেস আপিলাত ট্রাইব্যুনাল। মতিউর এনবিআরের সদস্য ছিলেন। তাঁকে ২৩ জুন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।
মতিউর কিছুদিন আগে আলোচনায় আসেন তাঁর ছেলের কারণে। পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানি দেওয়ার জন্য তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান মুশফিকুর রহমান (ইফাত) সাদিক অ্যাগ্রো নামের একটি খামার থেকে ১২ লাখ টাকায় ছাগল কেনার বায়না করেছিলেন।
এরপর মতিউর ও তাঁর পরিবারের বিপুল সম্পদের তথ্য সামনে আসে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মতিউরের সম্পদ অনুসন্ধান করছে। আদালত তাঁর এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী ও ছেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
মতিউর তাঁকে নিয়ে আলোচনা তৈরির পরই আড়ালে চলে যান। ঈদুল আজহার পর থেকে তিনি অফিসে যাচ্ছিলেন না। বদলি করার পর নতুন কার্যালয়ে তাঁকে দেখা যায়নি।
মতিউর অফিস করছেন কি না, এ বিষয়ে জানতে এই প্রতিবেদক আজ সচিবালয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে যান। সেখানে জ্যেষ্ঠ সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। পরে উপসচিব (কাস্টমস) মকিমা বেগমের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি কক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেননি।
যুগ্ম সচিব আবদুল গফুরের (কাস্টমস) কক্ষে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়। তবে তিনি শুধু মতিউরের আজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকার কথা জানান। এর বাইরে আর কিছু বলতে রাজি হননি।
ফলে নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে মতিউর নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন কি না, ছুটি নিয়েছেন কি না।
বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) সাবেক রেক্টর এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, মতিউরের বদলি হয়েছে ঢাকার মধ্যেই আরেক কর্মস্থলে। চাকরিবিধি অনুযায়ী বদলির দিনই তাঁর নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়া উচিত ছিল। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা কেন লুকোচুরি করছেন, তা বোধগম্য নয়। এখানে লুকোচুরির কিছু নেই।