সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা পূরণে পাশে থাকব: ইইউ কমিশনার
কালো দেয়াল মানেই একটি সমাজের নীরবতার প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশের তরুণেরা সেই দেয়াল রাঙিয়ে দিয়েছেন। তরুণদের সেই শিল্পগুলো নীরবতা পালনে অস্বীকৃতির সাক্ষ্য। প্রতিটি শিল্পকর্মই স্বাধীনতার সপক্ষে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর। তাই গণতান্ত্রিক উত্তরণে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
আজ সোমবার সকালের রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন পার্কে ‘বাংলাদেশ: ৩৬ জুলাই ২০২৪’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ইইউর সমতা, প্রস্তুতি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার আদজা লাবিব এ মন্তব্য করেন। ঢাকায় ইইউ দূতাবাস ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আদজা লাবিব বলেন, ‘শিল্প মানেই স্বাধীনতা। কালো দেয়াল একটি সমাজের নীরবতার প্রতিফলন। সেই দেয়ালকে আপনারা রাঙিয়ে দিয়েছেন। দেয়ালগুলো বলছে: আপনারা নীরবতা পালনে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। প্রতিটি শিল্পকর্মই স্বাধীনতার সপক্ষে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর।’
গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাংলাদেশের সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বেলজিয়ামের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদজা লাবিব বলেন, সংস্কারের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আকাঙ্ক্ষার প্রতি তিনি ও ইইউ পাশে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার এবং গণতন্ত্র হচ্ছে বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের মূল ভিত্তি। গত বছর জুলাই-আগস্টে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে সহিংসতা সবাই দেখেছি। কিন্তু আমি এটা আবিষ্কার করেছি যে জুলাই মাসে ৩১ দিনে শেষ হয়নি, তা শেষ হয়েছে ৩৬-এ। এই বইয়ের শক্তিশালী শিল্পকর্মগুলো ৫ আগস্ট বা ৩৬ জুলাই শুরু হওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোকে ধারণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, তরুণেরা সৃজনশীলভাবে তাদের দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করতে গিয়ে বলছেন, রাজনৈতিক পরিবর্তন অর্জিত হওয়ার আগে জুলাইয়ের পরিসমাপ্তি সমীচীন হবে না। বইয়ের শক্তিশালী শিল্পকর্মগুলো দমন-পীড়নের ভয়াবহতা এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে দেশের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেছে।
আদজা লাবিব বলেন, স্ট্রিট আর্টগুলোতে ট্র্যাজেডির প্রতিচ্ছবি রয়েছে। বিচার ও জবাবদিহির জন্য গর্ব ও আকাঙ্ক্ষাও আছে। এর আবেদনকে নির্দিষ্ট সময়ে আটকে রাখা যাবে না। কারণ, এতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের অধিকার, মানুষের জীবনের মূল্যবোধের কথা তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই শিল্পকর্মগুলোর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের মানুষের সাহস ও প্রত্যয়কে উদ্যাপন করি।’
বাংলাদেশের প্রতি ইইউর সমর্থনের কথা উল্লেখ করে আদজা লাবিব বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী ও নির্ভরযোগ্য মানবিক উন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক অংশীদার। বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর অংশীদারত্ব একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত এবং দুই পক্ষের অভিন্ন মূল্যবোধের কারণে গড়ে উঠেছে। ফলে বাংলাদেশে ইইউর সমর্থনের ওপর আস্থা রাখতে পারে।’