২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা: প্রধানমন্ত্রী

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর লক্ষ্য দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করা।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ রোববার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন, যার জন্য তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে তাঁর পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যসহ হত্যা করা হয়। একই বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়ার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে এমন সময়ে হত্যা করা হয়েছিল, যখন দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ‘মাই হাউস, মাই ফার্ম’, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ‘মাই ভিলেজ, মাই টাউন’ বাস্তবায়নসহ শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়ে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।

টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাচনী এলাকার জনগণকে কৃতিত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণত, অন্যান্য নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যরা শুধু তাঁদের নিজ নিজ এলাকার দেখাশোনা করেন। আর তাঁকে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হয়। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দারা তাঁর নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব নেওয়ায় তিনি এই কাজ করতে পেরেছেন।

দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনে ছয় বছরের নির্বাসন থেকে দেশে ফেরার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘোরেন বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই, যেখানে আমি যাইনি। আমি নৌকা, সাম্পান, লঞ্চ ও রিকশাভ্যানে চড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, সারা দেশ ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে তিনি বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে এসেছেন।

মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতা শুনতে চান। শেখ হাসিনা বয়সের কারণে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে স্থানীয় জনগণ তাঁকে দেশ-জনগণের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকার অনুরোধ জানান। তাঁরা শেখ হাসিনাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনাই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন—এই লক্ষ্যে তাঁরা কাজ করার এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সাহায্য করার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে গাড়িতে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান। দুই দিনের এই কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন তাঁর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফর স্থানীয় জনগণের মধ্যে বিপুল উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ যোগ করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পুরো গোপালগঞ্জকে রঙিন পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সাজানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রাঙ্গণে নিম, বকুল ও আমের চারা রোপণ করেন। এ ছাড়া তিনি নবনির্মিত কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধন করেন। শেখ হাসিনা পরে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিকেলে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ফাতেহা পাঠ করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে মোনাজাতে অংশ নেন। গতকাল রাতে টুঙ্গিপাড়ায় কাটান প্রধানমন্ত্রী। আজ বিকেলে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।