জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন মোট ৯৬.৬৭ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছে

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলনছবি: ফাউন্ডেশনের ফেসবুক

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন এখন পর্যন্ত মোট ৯৬ দশমিক ৬৭ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। ৬ হাজার ৩৪১ ব্যক্তি-পরিবার এই সহায়তা পেয়েছে।

আজ শুক্রবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, গত বছরে ১০ সেপ্টেম্বর ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুর দিন থেকে আজ পর্যন্ত ৭৪৫ জন শহীদ পরিবারকে ৩৭ দশমিক ২৫ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আর আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫ হাজার ৫৯৬ জনকে ৫৯ দশমিক ৪১ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

আইনি জটিলতার কারণে ১০০ শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেন মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি বলেন, ‘আহত যোদ্ধাদের পাশে বাংলাদেশ’ নামে নতুন একটি কর্মসূচির গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সারা দেশে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, পুনর্বাসনসহ যাবতীয় সহায়তার কাজ করা হবে।

শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সহায়তার পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি ধরে রাখতে ফাউন্ডেশন কাজ করছে বলে জানান মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে একটি অধিদপ্তর গঠন করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাঁরা যতটুকু জানতে পেরেছেন, সেই অধিদপ্তরটির নাম ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’। এ অধিদপ্তরটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রত্যেক শহীদের পরিবারের কাছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শুভেচ্ছাসহ উপহার পাঠানো হয়েছে বলে জানান মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

ফাউন্ডেশনের অর্থ সম্পাদক মোহা. আহসান হাবীব চৌধুরী বলেন, তাঁরা আহত ব্যক্তি ও শহীদদের পরিবারের সদস্যদের জন্য চাকরির ব্যবস্থার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া আহতর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাজের কর্মক্ষম মানুষের কাতারে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন তাঁরা।

আহসান হাবীব চৌধুরী বলেন, শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের অনেকে দীর্ঘ সময় একটা মানসিক ট্রমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এটা থেকে উত্তরণের জন্য তাঁরা মানসিক উন্নতি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা, বৈঠক করেছেন। তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে ফাউন্ডেশনের।

আহসান হাবীব চৌধুরী আরও বলেন, সরকার ফাউন্ডেশনে ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিল। অন্যান্য সংস্থা থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো পাওয়া গিয়েছিল। এই অর্থের বেশির ভাগ ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গেছে। তাঁরা ঈদের পর ফাউন্ডেশনের জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুদানের আবেদন জানাবেন।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী বলেন, প্রতিদিনই ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে অনেকে ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আসেন আহত সেজে। প্রতিদিনই এ রকম ভুয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে প্রকৃত যাঁরা আহত, তাঁদের নিয়ে কাজ করতে বিলম্ব হচ্ছে। এই ভুয়া ইস্যু এখন ফাউন্ডেশনের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁরা যে টাকাটা দিচ্ছেন অনুদান হিসেবে, তা মানুষের আমানতের টাকা। তাঁরা কোনোভাবেই চান না এই টাকা কোনো প্রতারকের হাতে যাক।