রাজধানীতে পাহাড়িদের ‘বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিষু’ মেলা শুরু ৯ এপ্রিল থেকে
চৈত্র মাস শেষের পথে। দেশের পার্বত্য এলাকায় চলছে বর্ষবিদায় ও বরণের উৎসবের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে এই উৎসবকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা আয়োজন। এবার পাহাড়িদের এই উৎসব উপলক্ষে রাজধানীতে ‘বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিষু’ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ উৎসব শুরু হবে আগামী বুধবার (৯ এপ্রিল), চলবে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত। রাজধানীর মিরপুর ১৩–এর শাক্যমুনি বৌদ্ধবিহারে তিন দিনের এ মেলা চলবে।
বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন এবং বৈশাখের প্রথম দিন পাহাড়ে শুরু হয় বর্ষবিদায় ও বরণের বর্ণিল আয়োজন। একেক জাতিগোষ্ঠী একেক নামে এ উৎসবকে অভিহিত করে। এবার উৎসব শুরু হবে ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল। সেই উৎসব উপলক্ষেই রাজধানীতে মেলার এ আয়োজন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১টি পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। এর মধ্যে বর্ষবিদায় ও বরণের এ উৎসবকে চাকমাদের বিজু বা বিঝু, মারমারা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরারা বৈসু বলেন। জনসংখ্যার বিচারে পাহাড়ের এই তিন জাতিগোষ্ঠী প্রধান। তিন জাতিগোষ্ঠী ছাড়াও অন্য জাতিগোষ্ঠীদেরও এ উৎসবের আছে ভিন্ন নামে। এই তিন জাতিগোষ্ঠী ছাড়াও তঞ্চঙ্গ্যাদের কাছে এ উৎসব বিষু এবং ম্রো এবং চাকরা একে চাংক্রান উৎসব বলেন।
পাহাড়ের উৎসব ঘিরে মেলার আয়োজন এবারই প্রথম বলে জানান উদ্যোক্তাদের একজন বিপলী চাকমা। তিনি বলছিলেন, ‘পাহাড়ের মানুষের উৎসব নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ আছে। পাহাড়িদের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, পোশাক, নানা ধরনের খাদ্য, ব্যবহার্য দ্রব্য, তৈজস ইত্যাদি নানা জিনিসের কদর আছে। এবারের মেলায় সেসবই তুলে ধরা হবে। পাহাড়ের মানুষের প্রাণের উৎসবের আগে এ এক নতুন উৎসব নগরবাসীর জন্য। যেখানে পাহাড়ি এবং বাঙালি সবাই অংশ নিতে পারবেন।’
প্রতিদিন মেলা শুরু হবে সকাল ১০টায়, চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। এর আয়োজন করছে ঢাকাস্থ পার্বত্য উদ্যোক্তা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড। আর সহযোগিতায় আছে জুবতা ও সিএইচটি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
৯ এপ্রিল সকালে মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। মেলার উদ্বোধন করবেন শাক্যমুনি বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞানন্দ মহাথের।
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
আর মেলার শেষ দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মেলার স্টলগুলোতে পাহাড়িদের পোশাক, খাদ্য, সবজি, তৈজসপত্র বিক্রি হবে।