স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন ধোয়ার যন্ত্রের কেনাকাটার অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন

কমলাপুর রেলস্টেশনের অটোমেটিক ওয়াশিং প্ল‍্যান্টটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। তাই পাইপ দিয়ে ট্রেন ধোয়ার কাজ করতে হয়। রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন, ১৫ মার্চফাইল ছবি: প্রথম আলো

স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেন ধোয়ার যন্ত্রের কেনাকাটার অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. জিয়াউল হক।

আজ সোমবার রেলপথ মন্ত্রণালয় তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্য করা হয়েছে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) আহমেদ মাহবুব চৌধুরীকে। কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেন ধোয়ার জন্য ৩৮ কোটি টাকায় দুটি স্বয়ংক্রিয় ধৌতকরণব্যবস্থা বা ওয়াশিং প্ল্যান্ট কিনেছিল। একটি স্থাপন করা হয় ঢাকার কমলাপুরে, অন্যটি রাজশাহীতে। ২০ মাসের মাথায় প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ হয়ে যায়।

এ নিয়ে ১৬ মার্চ ‘দুই বছরের মাথায় যন্ত্র বিকল: একেকটি ট্রেন ধুতে গচ্চা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা’ শিরোনামে প্রথম আলোতে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, দুটি প্ল্যান্ট দিয়ে ২ হাজার ৯২৯ বার ট্রেন ধোয়া সম্ভব হয়েছিল। হিসাব করে দেখা যায়, প্ল্যান্ট দুটি স্থাপনে যে ব্যয় হয়েছে, তাতে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্ল্যান্ট দুটি চালানো হতো বিদ্যুতের সাহায্যে। ট্রেন ধোয়ার কাজে পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হতো। এর পরিচালনায় থাকা লোকবলসহ সব খরচ ধরলে প্রতিটি ট্রেন ধোয়ার পেছনে দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। রেলওয়ে সব সময় চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক দিয়ে ট্রেন ধোয়ার কাজ করে থাকে। প্রচলিত ব্যবস্থায় হাতে ট্রেন ধুতে খরচ হয় এক হাজার টাকার মতো।

ওয়াশিং প্ল্যান্ট নামে যে ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, তাতে মূলত কিছু স্বয়ংক্রিয় ব্রাশ, সাবানপানি ও সাধারণ পানি ছিটানোর ব্যবস্থা এবং কয়েকটি বৈদ্যুতিক পাখা ছিল। সাধারণ এ ব্যবস্থা তৈরিতে এত ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই। রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক দিন ধরে প্ল্যান্ট দুটি বন্ধ। সেগুলো আবার চালু করতে আরও বিনিয়োগ দরকার, যা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।