পোপের আমন্ত্রণে ভ্রাতৃত্ববিষয়ক সম্মেলনে ড. ইউনূস
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস মানব ভ্রাতৃত্ববিষয়ক দ্বিতীয় বিশ্ব সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। গত শুক্র ও শনিবার ভ্যাটিকান সিটিতে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পোপ ষোড়শ ফ্রান্সিসের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসসহ ওই সম্মেলনে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ৩০ জন বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, চিকিৎসক, ব্যবস্থাপক কর্মী, ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরাসহ সাধারণ নাগরিকেরা এতে অংশ নেন।
পরিবেশ, শিক্ষা, ব্যবসা, কৃষি, মিডিয়া এবং স্বাস্থ্যে মানব ভ্রাতৃত্বের প্রচারের উপায় নিয়ে আলোচনা করতে ওই বিশ্ব সভায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ড. ইউনূস ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী গুয়াতেমালার রিগোবার্তা মেনচু তুম।
ইউনূস সেন্টারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্মেলনে গোলটেবিল আলোচনার সূচনা করেন ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অব স্টেট কার্ডিনাল পিয়েত্রো প্যারোলিন। তিনি বলেন, মানুষ যখন শান্তিকে অসম্মান করে, যুদ্ধ করে, মানুষকে হত্যা করে, তখন তারা কেবল অন্যদের মর্যাদাকে আঘাত করে না, বরং নিজেদেরও সম্মানহানি করে।
গোলটেবিল বৈঠক থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর, হত্যা বন্ধ এবং মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো তৈরির সময় মানুষ নিজেদের সম্পর্কে যেভাবে চিন্তা করে, তা মানবতার জন্য অস্ত্রের চেয়েও বেশি বড় হুমকি। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাগ করে নেওয়া এবং যত্ন নেওয়ার মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে মানুষ হিসেবে নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করতে হবে।’
রিগোবার্তা মেনচু তুম বর্তমান সমাজের বস্তুগত, সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক অবক্ষয়ের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ মানুষ হওয়ার জন্য আমাদের আত্মাকে লালন করার মতো মানুষের প্রয়োজন।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাশেল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ১১ মে একান্ত সভায় পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করেন। পোপ ফ্রান্সিস মানব ভ্রাতৃত্বকে এগিয়ে নিতে প্রচেষ্টা এবং অধ্যবসায়ের জন্য তাদের উত্সাহিত করেন।
পোপ বলেন, ‘যুদ্ধ একটি প্রতারণা, যুদ্ধ সর্বদাই পরাজয়। দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে আমাদের অবশ্যই সাধারণ মানবতার স্বীকৃতিতে ফিরে যেতে হবে এবং মানুষের জীবনের কেন্দ্রে ভ্রাতৃত্বকে স্থান দিতে হবে।’