দেশে খাদ্যের মজুত পর্যাপ্ত, আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা না করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের
পবিত্র রমজানের আগে দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে বলে আশ্বস্ত করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও)। তাই জনসাধারণকে আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে পিএমও।
রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে গতকাল রোববার পিএমওতে অনুষ্ঠিত এক প্রস্তুতিমূলক বৈঠক থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকে রমজান ও ঈদ সামনে রেখে দেশব্যাপী খাদ্যের মজুত-সরবরাহ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সার্বিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা, পানি সরবরাহ ও ঘরমুখী যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বৈঠকের পর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আসন্ন রমজানের আগে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত রয়েছে, যা আমাদের জন্য সন্তোষজনক।’
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া আরও বলেন, ‘রোজার সময় নিত্যপণ্য যাতে মানুষের কাছে পৌঁছায়, সাপ্লাই চেইন যাতে ঠিক থাকে, সে জন্য আমরা সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি।’
এ প্রেক্ষাপটে সবাইকে আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা করতে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া আশ্বস্ত করে বলেন, ‘একবারে অতিরিক্ত খাবার কেনার পরিবর্তে প্রত্যেকে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করলে কোনো সমস্যা হবে না। অর্থাৎ, যখন যার যা প্রয়োজন, তা নিলে কারও কোনো সমস্যা হবে না। আমরা খুব ভালোভাবে–সুন্দরভাবে রোজা ও ঈদ উদ্যাপন করতে পারব।’
সরকার ইতিমধ্যে চিনি আমদানির থেকে কর কমানোয় ও ট্যারিফ ভ্যালু তুলে দেওয়ায় রমজানে চিনির মূল্য কম থাকবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। সরকারের গৃহীত ব্যবস্থায় রমজানের আগে চিনির আমদানি অনেক বেশি হবে বলে মনে করেন তিনি।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, এ ছাড়া খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি (ওএমএস) যথারীতি অব্যাহত থাকবে। টিসিবি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করবে, যার মধ্যে রয়েছে ভোজ্যতেল, চিনি, চাল, পেঁয়াজ ও ছোলা। টিসিবি ঢাকা শহরে খেজুরও বিক্রি করবে।
রমজান ও ঈদ সামনে রেখে প্রায় ১০ কোটি মানুষ লাভবান হবে জানিয়ে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১ কেজি চাল ১৫ টাকায় বিক্রি হবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে। ইফতার ও সাহ্রির সময় যথাযথ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া রাত ১১টার পর সেচের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে ঈদের আগে ঘরমুখী যাত্রীদের নির্বিঘ্ন-নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। এবার চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য মজুত রয়েছে। কেউ অযৌক্তিকভাবে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ জন্য সারা দেশে কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।