সেই পাকিস্তান আমল থেকেই শাসকেরা রাষ্ট্রকে জনগণ ও সমাজের ওপর কর্তৃত্বের আসনেই বসিয়েছেন। জনগণ ও সমাজ এই কর্তৃত্ববাদী শাসন ও শাসকদের মানতে পারেনি। কিছুদিন পরপরই গণমানুষের অভ্যুত্থান এর প্রমাণ দেয়। তবে আইয়ুব খান থেকে এরশাদ পর্যন্ত অভ্যুত্থান-আন্দোলনের ফলে কখনো সামরিক কর্তাদের হাতে ক্ষমতা গেছে, কখনো পালাবদল ঘটেছে সক্রিয় রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে। কিন্তু তাতে কখনো শেষ বিচারে আন্দোলনকারী জনগণ ও সমাজের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এই বাস্তবতাকে সহজ ভাষায় বলা যায় আমরা রাজনীতির অনানুষ্ঠানিক খাতে অর্থাৎ আন্দোলন-সংগ্রামে সফল। কিন্তু আনুষ্ঠানিক খাতে অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনা, সংসদসহ সব প্রতিষ্ঠান কার্যকরে বারবার ব্যর্থ হচ্ছি।
মানতেই হবে, গত জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ছিল আগের সব আন্দোলন থেকে ভিন্ন। এতে সূচিত পরিবর্তনের সম্ভাবনার মধ্যেও ভিন্ন কিছু প্রত্যাশার সুযোগও যে তৈরি হয়েছে, তা মানতে হবে। প্রথমত, ছাত্রদের আন্দোলনে সরকারবিরোধী ছাত্রসংগঠনের এবং পরে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ ঘটলেও এর নেতৃত্ব কখনো প্রচলিত দলীয় রাজনীতির প্রভাবাধীন হয়নি; তাদের রাজনৈতিক চিন্তা চর্চার মাধ্যমে দানা না বাঁধলেও এবং তাতে বিভিন্ন সুর শোনা গেলেও একটি বিষয়ে ঐকমত্য বোঝা যায়। তারা ঐকান্তিকভাবে পুরোনো রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন এবং একটি সত্যিকারের গণমুখী নতুন ব্যবস্থার পত্তন হোক, তা চাইছে। একটু পেছন ফিরে বলব, বাংলাদেশ যে স্বাধীনতার পর থেকে রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ে হোঁচট খাচ্ছে, তার মূল কারণ একটি জাতির রূপান্তর এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিকসহ সব প্রত্যাশারও যে রূপান্তর ঘটেছিল, তা আওয়ামী লীগসহ প্রথাগত কোনো রাজনৈতিক দল উপলব্ধি করেনি। স্বাধীনতা–উত্তর রাজনীতির চাহিদার কথা আমরা কেউ কেউ বারবার বললেও তা সংশ্লিষ্ট কাউকে ভাবাতে পারেনি। স্বাধীনতা আমাদের ব্যবহারিক জীবনে আলোড়ন ঘটালেও, ভাবাবেগে নানা ঢেউ তুললেও, চিন্তা ও মননের জগতে সাড়া ফেলতে পারেনি। এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কথাটি গণমানুষের কাছে দ্রুত তাৎপর্য হারিয়েছে। কোনো অর্থবহ ভাবনার খোরাক আর জোগায় না। রাজনীতি মানুষের ভাবাবেগকে কাজে লাগাতে চেয়েছে, কিন্তু তাদের চিন্তা ও মননকে জাগাতে ও কাজে লাগাতে চায়নি, পারেনি।
২.
দেখা গেছে, কোনো শাসককে নিয়ে জনগণের অসন্তুষ্টি যখন ব্যাপক ও চরম আকার নিয়েছে, তখনই সমাজের সবচেয়ে সজীব সতেজ অংশ হিসেবে ছাত্র-তরুণেরা প্রতিবাদ-প্রতিরোধের সূচনা করেছে; তারপর মাঠে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি তাতে যুক্ত হয়েছে এবং এদেরই কেউ একই কায়দায় আন্দোলনের ফসল ভোগ করেছে। এই ছক থেকে আমরা এযাবৎ বেরোতে পারিনি। প্রশ্ন হলো, এবার কি পারব?
এ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়ের মাধ্যমে পুরোনো সরকারের পতন ঘটল। তবে এরপর অন্তর্বর্তী হিসেবে গঠিত সরকারে পুরোনো নাগরিক কাঠামোরই প্রাধান্য বজায় থাকল। যদিও আন্দোলনকারী মূল শক্তি ছাত্র-তরুণেরা যুগপৎ সরকারের ভেতরে থেকে অভীষ্ট সংস্কার নিশ্চিত করার চাপ বজায় রাখছে এবং সরকারের বাইরে থেকে পরবর্তীকালে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
এখন এ পর্যায়ে অভ্যুত্থানের মূল বার্তাটি সংশ্লিষ্ট সবার কাছে পৌঁছানোটাই ছিল জরুরি। সেটি হলো পুরোনো ধারার রাজনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনা আর চলবে না। ফরাসি বিপ্লব অনেক রক্তপাত সত্ত্বেও তখনই রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তনে সাফল্য পায়নি; কিন্তু তার সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতার বাণী যেমন অক্ষয় হয়েছে, তেমনি পুরোনো রাষ্ট্রব্যবস্থা বা ‘এনশিয়েন্ট রেজিম’ পরিবর্তনের ডাকও টিকে গেছে। সেখান থেকেই রাজতন্ত্রের (বা একনায়কতন্ত্রের) স্থলে রিপাবলিক বা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের শুরু। এ বার্তা বিপ্লবের আঁতুড় ফ্রান্সই কেবল নেয়নি, পশ্চিম ইউরোপে তা ছড়িয়েছে, পৌঁছেছে আমেরিকায়। ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী দেশে দেশে বার্তাটি ছড়িয়েছে। ফ্রান্সে এখন সম্ভবত পঞ্চম রিপাবলিক চলছে।
৩.
বোঝা যায়, বিপ্লব হোক বা না হোক, পুরোনো ব্যবস্থার পরিবর্তন করে নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তন সহজ কোনো কাজ নয়। পুরোনো সামন্ত সমাজের বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা ও মানসিকতা দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজের গভীরে শক্তভাবে টিকে রয়েছে। তাই ব্যক্তি ও সমাজের আলোকন ছাড়া গণতান্ত্রিক রূপান্তর টেকসই করা মুশকিল। সমাজের একটি বড় অংশের মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাচেতনা যদি জাতিগঠনের পশ্চাৎপট, সমকালীন পটভূমি এবং ভবিষ্যৎ–মুখী ভাবনায় ঋদ্ধ না হয় এবং সেই মানস যদি যুক্তি ও বিবেক দ্বারা স্বচ্ছ, সৎ এবং মানবিকভাবে শক্তিশালী না হয়, তাহলে মাঠপর্যায়ে আন্দোলনকে কাঠামোগত স্থায়িত্ব দেওয়া কঠিন। আবেগতাড়িত আন্দোলনের ফসলকে যুক্তিচালিত কাঠামোয় সংহত করার ক্ষেত্রে আমাদের দুর্বলতা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। বস্তুতপক্ষে রাষ্ট্র বা জাতির লক্ষ্যাদর্শ নিয়েও বারবার বিভ্রান্তির চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছি আমরা।
একটি অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় আইনি ও প্রতিষ্ঠানিক রূপান্তর ঘটাতে পারে, কিন্তু সমাজমানসের পরিবর্তন তো সময়সাপেক্ষ কাজ এবং তা রাষ্ট্রের একার কাজও নয়। রক্ষণশীল ও প্রগতিচিন্তা, আদর্শিক সংকীর্ণতা ও ভাবনাবৈচিত্র্যের ঔদার্য, প্রথা-সংস্কারের অচলায়তন ও নবায়ন-নির্মাণের সৃষ্টিশীলতার দ্বন্দ্বের ভেতর দিয়েই সমাজকে এগোতে হবে। ক্রোধ, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা, ঘৃণার মতো ভাবাবেগপুষ্ট তাড়না এ ধরনের বৌদ্ধিক চর্চাকে ব্যাহত করবেই এবং তাতে সমাজে পরিণত প্রাজ্ঞ চিন্তার অনটন দেখা দেবে। অন্তর্বর্তী সরকার তো তার ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব কাগজে-কলমে সুষ্ঠুভাবেই হয়তো সম্পাদন করবে, কিন্তু তাতে তো অভ্যুত্থানের ফলে সৃষ্ট সুযোগ সদ্ব্যবহারের প্রত্যাশা পূরণ নিশ্চিত হয় না।
৪.
জানা দরকার, রাষ্ট্র কোন পথে যাবে, তা নিয়ে সমাজ কী বার্তা দিয়েছে। খুব সংক্ষেপে এর একটি রেখাচিত্র তৈরির চেষ্টা করা যায়।
পাকিস্তান আন্দোলনের সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম জাতীয়তা বোধে উজ্জীবিত হলেও এটি ছিল মূলত তৎকালীন রাজনৈতিক প্রচারণারই ফল। তখন রাষ্ট্র গঠনের নানা দিক নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা বিদ্যায়তনিক বা সামাজিক পরিসরে তেমন হয়নি, রাজনৈতিক ভাষ্যের বাইরে সংবাদপত্রের প্রচারমূলক রচনায় তা প্রধানত সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে বাংলাভাষীদের প্রতিক্রিয়া এতই তীব্র ও ব্যাপক হয়েছিল যে তার ঢেউ সমাজের সর্বস্তরে লেগেছিল। তদুপরি এ আন্দোলনে চিন্তানায়ক হিসেবে বাঙালি প্রাজ্ঞজনেরা সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন। আবার পাকিস্তানের পাঞ্জাবি সামরিক-বেসামরিক আমলানিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ববঙ্গের প্রতি, মোটাদাগে বাঙালিদের প্রতি চরম বৈষম্যমূলক আচরণ করেছিল ও সর্বক্ষেত্রে সেভাবেই ভূমিকা পালন করেছিল। এভাবে এ দেশে পাকিস্তানবিরোধী বাঙালি জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বাস্তবতা তৈরি হয়। সেটা সফলভাবে কাজে লাগিয়েছেন শেখ মুজিব, ত্যাগ ও সাহসী ভূমিকা নিয়ে এবং সময়োপযোগী কর্মসূচি দিয়ে তিনি ওই সময়ের জাগ্রত জাতির নিয়ন্তা ও নায়ক হয়ে উঠেছিলেন। এর ভিত্তিতেই লক্ষ প্রাণের ও বহু মানুষের বিপুল ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, যার তুলনা এ ভূখণ্ডের ইতিহাসে আর নেই।
কিন্তু এতেই যে রাষ্ট্রের লক্ষ্যাদর্শের বিভ্রান্তির চূড়ান্ত সীমাংসা হয়েছিল তা বলা যাবে না। দেখা যাচ্ছে, গোটা উপমহাদেশের বেশির ভাগ জনগোষ্ঠীর মানসে ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্যের চেতনা একটি বড় অনুষঙ্গ। খুব সহজেই তাদের রাষ্ট্র গঠনের প্রণোদনাকে এই অভিমুখে পরিচালিত করা যায়। বিপরীতে ভাষা আন্দোলনে যে গণতান্ত্রিক চেতনা গুরুত্ব পেয়েছে, তার মূল বাণী অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদ। এর ভেতরে ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে এ অঞ্চলে উদ্ভূত-চর্চিত মনন ও সৃজনশীল সব কাজের শ্রেষ্ঠ সম্পদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেছে। এই মোটাদাগের বিভাজনের ভেতরে উভয় দিকে আরও নানা উপধারার অস্তিত্ব থাকাই স্বাভাবিক। এই পটভূমি মনে রেখে জরুরি বিবেচ্য বিষয় হিসেবে নতুন অনেক বৈশ্বিক ইস্যু এবং বিস্তর দেশীয় ইস্যুরও আশু সমাধান প্রয়োজন। নয়তো দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে।
৫.
ইংরেজের সূত্রে এ দেশে একটি কালান্তর ঘটেছিল, সে কথা রবীন্দ্রনাথ বিস্তার বলেছেন। একটি সামন্ত গ্রামীণ কৃষিভিত্তিক প্রায় স্থবির সমাজে চিন্তার জঙ্গমতা এসেছে ইংরেজেরই দৌত্যে। উপনিবেশায়নের নেতিবাচক দিকগুলো মেনেও এই ইতিবাচক ঘটনা মানতে হয়। ইংরেজের এই সক্ষমতার পেছনে ছিল ইউরোপের রেনেসাঁস ও আলোকন এবং তাদের নিজেদের শিল্পবিপ্লবের ভূমিকা। বস্তুত এই তিন ঘটনার প্রভাবে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে সারা বিশ্বে পশ্চিম ইউরোপের প্রভাব ও প্রাধান্য নিশ্চিত হয়েছে।
প্রায় চার দশক ধরে মুক্তবাজার অর্থনীতির একক প্রাধান্য এবং বিপরীতে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসানের ফলে বিশ্বব্যবস্থায় পরিবর্তনের ধাক্কা লেগেছে। পাশাপাশি এর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর অভিযাত্রা প্রায় গোটা বিশ্বের মানুষের জীবনযাপন ও ব্যবস্থায় এমন পরিবর্তন ঘটিয়েছে যে এর প্রভাব শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, প্রশাসন, চলাচল, যোগাযোগ—কোথায় না পড়ছে। বলা যায়, গত ৪০ বছরে আরেকটি কালান্তর ঘটেছে, যাকে বলা যায় বৈশ্বিক কালান্তর।
ফলে যুগোপযোগী দক্ষ দায়িত্বশীল মানবসম্পদ তৈরির উপাদান ও ব্যবস্থার কথা সমকালীন রাজনীতিতে থাকতে হবে। মোটকথা, পুরোনো ইস্যুগুলোর কোনটি থাকবে, কোনটি বর্জিত হবে এবং নতুন কোন কোন বিষয় যুক্ত হবে, তা বুঝে নিতে হবে। এ কাজ ঐতিহ্যবাহী দলগুলোর জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য—নবায়ন ও রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে সবাইকেই।
পৃথিবীর এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উৎপাদন ও ভোগের ভিত্তিতে যে প্রবৃদ্ধির হিসাব, তা তামাদি হয়ে পড়ছে। অনেকেই ডিগ্রোথ; অর্থাৎ ভোগ কমানোর তাগিদ দিচ্ছেন। বিজ্ঞানী মার্টিন রিজের সতর্কবার্তা মনে রাখা দরকার। তিনি বলেছেন, একবিংশ হবে মানবজাতির চূড়ান্ত শতক। বিনাশের সর্বনাশা উন্নয়নের রথ থামাতে হবে। অতিমারি করোনাতেই শেষ হয়নি, আরও ভয়ংকর সব রোগের আঘাত হানার শঙ্কা বাড়ছে। এ রকম বাস্তবতায়ও পশ্চিমের মজ্জাগত সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, যুদ্ধাস্ত্রের অর্থনীতি কি স্তিমিত হওয়ার পরিবর্তে তেজিয়ান হচ্ছে না? প্যালেস্টাইনে বৎসরাধিক কাল ধরে ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ এবং গণহত্যা চলছে, অথচ কোথাও কার্যকর কোনো প্রতিবাদ নেই। নব্বই শতাংশ মুসলমানের এই বাংলাদেশেও নেই। সিরিয়ায় বর্তমানে ইরাক-লিবিয়া-আফগানিস্তানের মতো পরিণতির কাজ চলছে। বিগত সরকারের অপরাধের বিচার ছাড়াও ঘরেও তো অনেক কাজ, দুর্নীতির ব্যাপকতা ও গভীরতা ভয়ংকর পর্যায়ে রয়েছে, বেসরকারি খাতের বিকাশ আশানুরূপ নয়, বেকারত্ব অসহনীয় পর্যায়ে রয়েছে, সমাজে অস্থিরতার পাশাপাশি ভয়ংকর অপরাধের প্রবণতা আরও বেড়েছে।
ফলে পালাবদলের এই জটিল, তবে সম্ভাবনার সময় বড্ড বেশি ক্রোধ, প্রতিহিংসা, ঘৃণার হুমকি-বয়ান শুনে একটু থমকে যাই। এসবই যে মানুষের নেতিবাচক প্রবণতা, প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ করে। তখন যেন মনে পড়ে যায় কারামুক্তির পর ম্যান্ডেলার উক্তি, ‘আমি যখন ঘরের দরজা থেকে তোরণের দিকে মুক্তির পথে হাঁটছিলাম, তখন জানতাম, যদি মনের তিক্ততা ও ঘৃণা পেছনে রেখে না যাই, তবে মুক্তির পরেও আমি বন্দীই হয়ে থাকব।’
সত্যিকারের পরিবর্তন ঘটাতে হলে নেতৃত্বকে শেষ পর্যন্ত মানবের (মহামানবের?) ভূমিকাই নিতে হয়।
আবুল মোমেন: প্রাবন্ধিক; দৈনিক আমাদের সময়–এর সম্পাদক