নারীর লড়াইকে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার
স্বাধীন বাংলাদেশ জন্মের অল্প সময় আগে জন্ম নেয় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এরপর স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে ৫৫ বছর ধরে দেশজুড়ে কাজ করছেন সংগঠনের সদস্যরা। সমতা অর্জনে নারীর লড়াইকে এগিয়ে নিতে অব্যাহতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে আজ শুক্রবার ৪ এপ্রিল পালিত হলো মহিলা পরিষদের ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংগঠনের নিজ কার্যালয় সুফিয়া কামাল ভবনের সামনে জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গানের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান।
সংগঠনের তথ্য অনুসারে, ১৯৬৯ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি পর্বে উত্তাল গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র আন্দোলন, নারী আন্দোলন, সামাজিক আন্দোলনের কর্মী-সংগঠকেরা মিলিত হয়ে এ সংগঠনের গোড়াপত্তন করেন। ১৯৭০ সালের ৪ এপ্রিল কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে প্রগতিশীল, রাজনৈতিক, সামাজিক, নারীমুক্তি সংগঠন ও ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতায় পূর্ব পাকিস্তান মহিলা পরিষদের জন্ম হয়। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠকেরা সব আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে প্রথম সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
‘দক্ষ সংগঠক গড়ে তুলি, সংগঠনকে সংহত করি’ স্লোগানের আলোকে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করা হয়। ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি পরিবেশন করা হয় দেশাত্মবোধক গান ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা’ এবং ‘ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা....’।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল পর্যায়ের সদস্যদের নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রায় একই সময়ে হাত ধরাধরি করে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধে যে জাগরণের সৃষ্টি হয়েছিল, তাকে কেন্দ্র করে সংগঠনটি চলে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যেমন সংকট রয়েছে, তেমনি নারীর জীবনেও অনেক সংকট রয়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় কর্মসূচি নিতে হয়। লক্ষ্য ধরে এগোতে হয়। সেভাবে কর্মসূচি কৌশল ধরে কাজ করতে হবে। নারীর অধিকারই মানবাধিকার। যত দিন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হয়, তত দিন মহিলা পরিষদের সংগ্রাম চলবে। ফওজিয়া মোসলেম সমতা অর্জনের পথে নারীর লড়াইকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য সৈয়দা রত্না ও মাধবী বণিক এবং সংগঠনের রোকেয়া সদনের তত্ত্বাবধায়ক অশ্রু ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম।