সাদপন্থীদের ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধের দাবি মামুনুল হকের

আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ মাওলানা জুবায়েরপন্থী ও সাদপন্থীদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মো. মামুনুল হক বলেছেন, ‘ইজতেমা মাঠে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডকে অনেকে দুই পক্ষের সংঘর্ষের কথা বলেছেন। আসলে এটা সংঘর্ষ ছিল না। এখানে সাদপন্থীরা হামলা করে চারজনকে হত্যা করেছেন। এ হামলায় কারা জড়িত, তার ভিডিও ফুটেজ আছে। আমাদের দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করতে হবে।’

আজ বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ মাওলানা জুবায়েরপন্থী ও সাদপন্থীদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আলাদাভাবে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মামুনুল হক। তিনি সাদপন্থীদের সন্ত্রাসী সংগঠন বলে আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধের দাবি করেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালেও তাঁরা হামলা করেছিলেন। তখনো তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বিশ্ব ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে আজ বেলা ১১টায় সাদপন্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দুপুর ১২টায় বৈঠক হয় জুবায়েরপন্থীদের সঙ্গে। দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে মূলত সকালের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে। এ সংঘর্ষে তিনজন নিহতের বিষয়টি পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে মামুনুল হক উল্লেখ করেন, নিহত হয়েছেন চারজন।

মামুনুল হক বলেন, সাদপন্থীরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে দুই দিন ধরে আলোচনা চলছে। আলোচনা চলার মধ্যেই তাঁরা হামলা করে ঘুমন্ত মানুষকে হত্যা করেছেন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার টঙ্গী অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহারের আভাস দিয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘কাকরাইলে আলেম–ওলামাদের সঙ্গে আলোচনা করে আজ এ বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে।’

সাদপন্থীরা ইজতেমা করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটার পর তাদের নৈতিক অধিকার নেই ইজতেমা করার।’

এর আগে সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে ইজতেমা মাঠে হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন সাদপন্থীদের প্রতিনিধি রেজা আরিফ। একই সঙ্গে ইজতেমা মাঠ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

রেজা আরিফ বলেন, ‘উপদেষ্টারা অনুরোধ করেছেন মাঠ ছেড়ে দেওয়ার জন্য। সরকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা মাঠ ছেড়ে দিচ্ছি। সরকার এখন মাঠের দায়িত্ব নেবে। জুবায়েরপন্থীরা মাঠে ঢুকবে না। আমরাও ঢুকব না। কেউ যাতে উসকানিমূলক বক্তব্য না দেন, সে অনুরোধ করেন তিনি।’

রেজা আরিফ আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় কে দায়ী, সেটা জরুরি নয়। মুসলমান মুসলমানের সঙ্গে মারামারি করা উচিত হয়নি। কারা এ জন্য দায়ী, সেটা নিয়ে এখন আর আলোচনা করব না। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না, এমনটা নিশ্চয়তা দিচ্ছি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।’