রাঙামাটিতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত দাবি
রাঙামাটি শহরের কাঁঠালতলি এলাকায় মৈত্রী বিহারে দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মৈত্রী বিহারের দেশনালয়ে (ধর্মীয় সভাকক্ষ) এক সংবাদ সম্মেলনে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশের সভাপতি শ্রদ্ধালংকার মহাথের। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মৈত্রী বিহারের বিহার অধ্যক্ষ পুণ্যজ্যোতি মহাথের, পুণ্যকীর্তি মহাথের, শীলানন্দ মহাথের প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, রাঙামাটি শহরের বৌদ্ধ বিহারের মধ্যে মৈত্রী বিহার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। হামলাকারীরা বিহারের গেট ও বুদ্ধমূর্তি, আসবাব ও জানালা ভাঙচুর করে। এ ছাড়া দুটি দানবাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিতের পর বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানানো হয়।
সহিংসতায় ক্ষতি ৯ কোটি ২২ লাখ টাকা
রাঙামাটির শহরে পাহাড়ি-বাঙালি সহিংসতার ঘটনায় ৯ কোটি ২২ লাখ ৪৫ হাজার টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঘটনার তিন দিন পর আজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানানো হয়।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া ক্ষয়ক্ষতির তথ্য বিবরণ অনুযায়ী, সহিংসতায় ৪৬টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি মোটরসাইকেল ও আঞ্চলিক পরিষদের ৯টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভাঙচুর করা হয় মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ট্রাক ও বাস। যানবাহনের পাশাপাশি ৮৯টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর চালানো হয় দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, আটটি ব্যাংক, ১৮টি বসতঘর, ৮৫টি অস্থায়ী দোকান, দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ট্রাফিক পুলিশ বক্সে। সব মিলিয়ে আনুমানিক ৯ কোটি ২২ লাখ ৪৫ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। বরাদ্দ এলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা হবে।’