হতাহত ব্যক্তি উদ্ধার হলেই সাইরেন বাজিয়ে চলে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন জ্বলছে তখনো। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহত এক শ্রমিককে উদ্ধারের পর চ্যাংদোলা করে দুর্ঘটনাস্থলের বাইরে নিয়ে আসেন। এ সময় উদ্ধারকারী সদস্য ও পুলিশের হুইসেল চারদিক থেকে বেজে উঠতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই একটি অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে এসে হাজির হয় সেখানে।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়ামাত্রই সাইরেন বাজিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে দ্রুত চলে যায় সেটি। উপস্থিত লোকজন জানান, এভাবে রাত ১১টার পর থেকে একের পর এক উদ্ধার করা হতাহত ব্যক্তিদের নিয়ে গেছে একেকটি অ্যাম্বুলেন্স। সাইরেনের আওয়াজে চারদিক ভারী হয়ে ওঠে তখন।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনঃ
বিষাক্ত ধোঁয়ায় নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, চোখ দিয়ে ঝরছে পানি
মালিকপক্ষ আসেনি, কী কেমিক্যাল জানতে পারছে না উদ্ধারকারীরা
বিস্ফোরণের শব্দে ভয়ে কেঁদে ওঠে আশপাশের বাড়ির শিশুরা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে গতকাল রাতে আগুন লাগার পর রাত পৌনে ১১টার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পর আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো।
পরে মেডিকেলে হতাহত ব্যক্তিদের নামিয়ে আবারও দুর্ঘটনাস্থলে চলে আসে অ্যাম্বুলেন্স। আজ ভোররাত চারটা পর্যন্ত এই অবস্থা দেখা গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে বিএম কনটেইনার ডিপো মূল ফটকের দৈর্ঘ্য প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার। বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো হতাহত ব্যক্তি উদ্ধার হলে তাঁদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে এই সড়কের এক পাশে অপেক্ষা করতে থাকে অ্যাম্বুলেন্সগুলো। সড়কটিতে জায়গা না পেয়ে অনেক অ্যাম্বুলেন্সকে মহাসড়কেও অবস্থান করতে দেখা গেছে।
যখনই কোনো হতাহত ব্যক্তি উদ্ধার হয়েছে, তখনই একেকটি অ্যাম্বুলেন্স চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের দিকে ছেড়ে গেছে। ভোররাত চারটার দিকেও ১০টি অ্যাম্বুলেন্স অপেক্ষা করছিল।
হতাহতের বিষয়ে কথা বলতে চাননি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তবে সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক প্রথম আলোকে বলেন, হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধারের পর অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স সংকট দেখা দিলে কিছু অ্যাম্বুলেন্স খালি থাকা অবস্থায় চলে যায়।
রাত সাড়ে তিনটায় ঘটনাস্থলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, এই দুর্ঘটনায় পুলিশের ৯ ও ফায়ার সার্ভিসের ৫৩ সদস্যসহ মোট দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।