বিশেষ লেখা
সিনোভ্যাকের কোভিড-১৯ টিকা অত্যন্ত সম্ভাবনাময়
করোনা প্রতিরোধে কার্যকর ও নিরাপদ টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে। বাংলাদেশেও মানুষের এ নিয়ে আগ্রহ রয়েছে। এ বিষয়ে প্রথম আলোর জন্য লিখেছেন পাঁচজন জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী জন ডি ক্লেমেন্স, ইয়ান হোমগ্রেন, কে জামান, ফেরদৌসী কাদরী ও অ্যালেন রস।
টিকা আবিষ্কার ও উন্নয়নে মানুষের অংশগ্রহণে পরিচালিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল একটি নিয়ন্ত্রিত গবেষণা, যার মাধ্যমে একটি রোগের বিরুদ্ধে উদ্ভাবিত টিকার রোগ প্রতিরোধমূলক ক্ষমতার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। বাংলাদেশে আইসিডিডিআরবি যখন চীনের সিনোভ্যাক লাইফ সায়েন্সেস কো. লি.-এর তৈরি ইনঅ্যাকটিভেটেড সার্স-কোভ-২ (কোভিড-১৯)-এর টিকার তৃতীয় ধাপ বা ফেজ-৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, তখন এই টিকার গুণাবলি নিয়ে কিছু ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। সবার জন্য কোভিড-১৯ টিকার নিরাপদ ও কার্যকরী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এ ধরনের ফেজ-৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল আবশ্যক। অনেক নেতিবাচক মন্তব্যই ভিত্তিহীন এবং সেগুলোর কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই। এখানে আমরা সিনোভ্যাকের কোভিড-১৯ টিকাসংক্রান্ত কিছু ভ্রান্ত ধারণা দূর করাসহ প্রস্তাবিত ফেজ-৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিষয়ে সংশয় দূর করতে চাই।
সিনোভ্যাকের কোভিড-১৯ টিকা
প্রকৃতপক্ষে সিনোভ্যাকের কোভিড-১৯ টিকাটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, এটি সম্পূর্ণরূপে নিষ্ক্রিয় সার্স-কোভ-২ ভাইরাস দিয়ে তৈরি। ইতিমধ্যে এই টিকা প্রাণীদের ওপর ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং দেখা গেছে যে এটি নিরাপদ ও সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম। এবং যে দিকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, টিকা দেওয়া বানরদের যখন অত্যন্ত শক্তিশালী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত করানোর চেষ্টা করা হয়েছে, তখন এটি ভাইরাসের সংক্রমণকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। এ ছাড়া কঠোর পরীক্ষামূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চীনের শত শত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে যে এই টিকা নিরাপদ এবং এটি দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম।
সিনোভ্যাক টিকা সার্স-কোভ-২-এর বিরুদ্ধে মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সফল। সিনোভ্যাকের টিকাটির দুই ডোজ দেওয়ার পর ৯০ শতাংশের বেশি মানুষের দেহে ভাইরাস নিষ্ক্রিয়কারী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। উল্লেখ্য, যদিও আমরা ধরে নিচ্ছি কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিবডির সম্পর্ক আছে, তবে এটি এখনো ভাইরাসজনিত (সার্স-কোভ-২ ব্যতীত) সংক্রমণের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে একটি ধারণা মাত্র, যা এখনো বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত নয়। বস্তুত, আমাদের কাছে সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত নেই যে মানুষের ক্ষেত্রে সার্স-কোভ-২-এর দ্বিতীয় সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রথম সংক্রমণ কতটা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলে। অন্যদিকে, সিনোভ্যাক টিকার টি-সেল প্রতিক্রিয়াও (রেসপন্স) দেখা হয়েছে, কিন্তু এখনো আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য নেই যে মানুষের মধ্যে সার্স-কোভ-২ সংক্রমণ প্রতিরোধে এই টি-সেল প্রতিক্রিয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবতা হলো, সার্স-কোভ-২-এর ক্ষেত্রে কী ধরনের ইমিউন রেসপন্স প্রাসঙ্গিক, তার জ্ঞানভিত্তিক অনুমানের ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি পরীক্ষাধীন টিকা (ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট) উন্নয়নের প্রয়াস চলছে। সম্ভবত বর্তমানে পরীক্ষাধীন টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হলো, পরীক্ষাগারে বানরকে টিকা দেওয়ার পর শক্তিশালী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত করার চেষ্টায় টিকাটি তা প্রতিরোধ করতে সক্ষম কিনা, সেটি। সিনোভ্যাকের টিকা সুস্পষ্টভাবে এই মানদণ্ড পূরণ করে এবং বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের দ্বারা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত যে এটি মানুষের অংশগ্রহণে পরীক্ষাকৃত কোভিড-১৯-এর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় টিকা।
সিনোভ্যাকের টিকা কি কোভিড-১৯ রোগটির ইমিউন এনহান্সমেন্ট বা ব্যাকফায়ার করে ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে? রোগের বিরুদ্ধে ইমিউন এনহান্সমেন্ট এমআরএনএর (মডার্না) মতো আধুনিক বায়োটেকনোলজি অথবা অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টরসহ (অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রা জেনেকা) সব পরীক্ষাধীন টিকার ক্ষেত্রে একটি চিন্তার বিষয় এবং এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) সব পরীক্ষাধীন টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল গবেষণায় সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখার আহ্বান জানিয়েছে। সিনোভ্যাকের টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল এই দিকনির্দেশনা মেনেই করা হচ্ছে। প্রাণীদের ওপর সিনোভ্যাকের টিকা প্রয়োগের পর ইমিউন এনহান্সমেন্ট দেখা যায়নি এবং টিকার তৃতীয় পর্বের গবেষণা, যা ইতিমধ্যে ব্রাজিলে শুরু হয়েছে তাতে এখন পর্যন্ত ইমিউন এনহান্সমেন্ট বা ব্যাকফায়ারিংয়ের কোনো দৃষ্টান্ত দেখা যায়নি। সব দেশের ট্রায়ালেই এটি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সিনোভ্যাক টিকার গবেষণার ফলাফলের কি যথাযথ কোনো পর্যালোচনা হয়নি? প্রাণীদের মধ্যে এই টিকার প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল সায়েন্স-এর মতো অন্যতম বিশ্ববিখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ফেজ-১ ও ফেজ-২ গবেষণার ফলাফল প্রকাশনার জন্য জমা দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে অনলাইনে প্রাক্প্রকাশনা হিসেবে সবার জ্ঞাতার্থে মেডআরএক্সআইভি (medRxiv)-তে দেওয়া আছে। আইসিডিডিআরবি-ইথিক্যাল ও রিসার্চ রিভিউ কমিটি এবং বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এসব তথ্যের পর্যালোচনা করেছে। বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরেও ফেজ-১ এবং ফেজ-২ গবেষণার ফলাফল জমা দেওয়া হয়েছে। অধিকন্তু, ব্রাজিলে গবেষণার আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত ব্রাজিলিয়ান ন্যাশনাল রেগুলেটরি অথরিটির দ্বারাও ফলাফল পর্যালোচনা করা হয়েছে। ফেজ-৩ ট্রায়ালে অংশ নেওয়া অন্যান্য দেশের সায়েন্টিফিক কমিউনিটি এবং কর্তৃপক্ষ পর্যালোচনা করেই ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক রেগুলেটরি সংস্থাসমূহ পরীক্ষাধীন টিকার গুণাবলি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-সংশ্লিষ্ট তথ্যসমূহ পর্যালোচনা করেই পরবর্তী সময়ে টিকার লাইসেন্স দেবে।
সিনোভ্যাকের টিকা ‘আদ্যিকালের’ ইনঅ্যাকটিভেটেড ভাইরাসের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে এবং এর চেয়ে কি ‘নতুন প্রজন্মের’ প্রযুক্তি যেমন এমআরএনএ টিকা (এনআইএইচ/মডার্না) এবং যেসব টিকায় সংশ্লিষ্ট জীবন্ত অ্যাডিনোভাইরাসকে করোনাভাইরাসের জিন বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে (অক্সফোর্ড/অ্যাস্ট্রা জেনেকা), সেগুলো অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের বিবৃতির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং পোলিওর বিরুদ্ধে কার্যকর ও লাইসেন্সধারী টিকা হিসেবে ইনঅ্যাকটিভেটেড ভাইরাস প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। অপর দিকে, এ পর্যন্ত কোনো এমআরএনএ বা অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর প্রযুক্তির টিকা মানুষের ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স পায়নি। আগেও বিভিন্ন সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে অ্যাডিনোভাইরাস ভেক্টর প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশ কিছু পরীক্ষামূলক টিকা উদ্ভাবিত হয়েছিল, যেগুলো মানুষকে সে রোগগুলো থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই বলে বলা যাবে না যে নতুন প্রজন্মের টিকাগুলো ব্যর্থ হবে বরং সিনোভ্যাকেরটিসহ কোভিড-১৯-এর সব পরীক্ষামূলক টিকা প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ফেজ-১ ও ফেজ-২ ট্রায়ালে নিরাপদ ও কার্যকর প্রমাণিত হলে ফেজ-৩ ট্রায়ালের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
পরিকল্পিত ফেজ-৩ ট্রায়াল
অতিসম্প্রতি সিনোভ্যাক তাদের সার্স-কোভ-২-এর পিউরিফাইড ইনঅ্যাকটিভেটেড টিকার (করোনাভ্যাক, পূর্বের পিকোভ্যাক) ফেজ-১ ও ২ ট্রায়াল চীনে সম্পন্ন করেছে। এসব গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল, সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে পরীক্ষামূলক টিকাটি নিরাপদ ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা প্রদানে সক্ষম কি না, তা যাচাই করা। ইতিমধ্যে বলা হয়েছে, টিকাটি নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। সিনোভ্যাক বর্তমানে ব্রাজিল, সৌদি আরব, তুরস্ক, চিলি, ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশে ইনডিভিজুয়ালি ডাবল-ব্লাইন্ড প্লাসিবো কনট্রোলড ফেজ-৩ ট্রায়াল পরিচালনা করতে ইচ্ছুক, যার উদ্দেশ্য হলো আরও বেশি সংখ্যক মানুষের মধ্যে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকাটি কার্যকর ও নিরাপদ কি না, তা দেখা। বিভিন্ন দেশে এই ট্রায়ালগুলো পরিচালনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব একেক জনগোষ্ঠীর ওপর একেক রকমের এবং একেক গোষ্ঠী টিকার প্রতি একেক ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে থাকে।
বাংলাদেশে আমরা ঢাকার সাতটি হাসপাতালে সার্স-কোভ-২ রোগীর সেবা করছে এমন ৪ হাজার ২০০ শিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীকে (ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড অ্যাটেনডেন্ট) এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করব, যাঁরা এখনো কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হননি। অংশগ্রহণকারীদের ১: ১ অনুপাতে র্যান্ডমাইজড করা হবে, যারা হয় সিনোভ্যাক (করোনাভ্যাক) টিকার দুটি ডোজ পাবে অথবা প্লাসিবো পাবে। দুই ডোজের রেজিমেন (প্রাইম এবং একটি বুস্টার) টিকা অথবা প্লাসিবো মাংসপেশিতে দেওয়া হবে অন্তর্ভুক্তির দিন এবং ১৪ দিনের দিন। সবাইকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ (ফলোআপ) করা হবে একটি ব্লাইন্ডেড প্রক্রিয়ায়, যাতে কে টিকা বা প্লাসিবো পেয়েছে, তা গবেষণার স্বার্থে গোপন থাকে। কোভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে এই টিকার প্রতিরোধক্ষমতা এবং নিরাপত্তা যাচাইয়ের জন্য গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত কল সেন্টারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকবে। যদি কোনো অংশগ্রহণকারী কোনো রকম উপসর্গ লক্ষ করেন, তাহলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সব অংশগ্রহণকারীর জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে। টিকার নিরাপত্তা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা সার্স-কোভ-২ বিষয়ক ইমিউন এনহান্সমেন্ট যাচাইয়ের জন্য অংশগ্রহণকারীদের ১ বছর ধরে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, যদি প্রথম ছয় মাসের মধ্যেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অংশগ্রহণকারী কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হন, তবে টিকার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতার ব্যাপারে একটি উপসংহারে পৌঁছানো যাবে।
সিনোভ্যাকের কোভিড-১৯ টিকার ফেজ-৩ গবেষণা পরিচালনা করলে দেশ কীভাবে উপকৃত হবে?
কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে কার্যকর ও নিরাপদ একটি টিকা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অগণিত মানুষকে রক্ষা করবে। যদি করোনাভ্যাক সফল হয়, তবে সিনোভ্যাক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আমাদের দেশকে ১ লাখ ১০ হাজার ডোজ টিকা বিনা মূল্যে প্রদান করবে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সিনোভ্যাক বাংলাদেশের একটি যোগ্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিকে লাইসেন্সের মাধ্যমে টিকা উৎপাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি হস্তান্তর (টেকনোলজি লাইসেন্সিং) করবে এবং বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকার জোগান দেবে।
বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে রাখা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাপকসংখ্যক টিকা সংস্থানের ক্ষেত্রে এর মূল্য সিনোভ্যাক এবং আমাদের স্থানীয় কোম্পানির মধ্যে মধ্যস্থতার মাধ্যমে স্থির করা হবে। সে ক্ষেত্রে জনগণকে সুলভ মূল্যে টিকা জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই গবেষণা সফল হলে এটি দেশের জনগণ এবং বাংলাদেশ সরকারের জন্য একটি বিশাল কৃতিত্বের বিষয় হবে। অধিকন্তু, এটি সরাসরি বাংলাদেশের নাগরিক এবং সারা পৃথিবীকে উপকৃত করবে।
অধ্যাপক জন ডি ক্লেমেন্স: এমডি, নির্বাহী পরিচালক, আইসিডিডিআরবি
অধ্যাপক ইয়ান হোমগ্রেন: এমডি, পিএইডি, ইউনিভার্সিটি অব গুটেনবার্গ
ড. কে জামান: এমবিবিএস, এমপিএইচ, পিএইচডি, জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী, আইসিডিডিআরবি
ড. ফেরদৌসী কাদরী: পিএইচডি, জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী, আইসিডিডিআরবি
অধ্যাপক অ্যালেন রস: এমডি, পিএইচডি, জ্যেষ্ঠ পরিচালক, ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশন, আইসিডিডিআরবি
অধ্যাপক ক্লেমেন্স এবং অধ্যাপক হোমগ্রেন টিকাবিষয়ক গবেষণা ও তৈরি এবং জনস্বাস্থ্যে তাঁদের অনবদ্য অবদানের জন্য সাবিন স্বর্ণপদক (যুক্তরাষ্ট্র) এবং প্রিন্স মাহিদল অ্যাওয়ার্ডে (থাইল্যান্ড) ভূষিত হয়েছেন।