সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় মারা গেছেন ৯ জন

দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ১৩ থেকে ২০ অক্টোবরের মধ্যে মারা গেছেন ৯ জন। এর মধ্যে ছয়জন মুসলিম ও তিনজন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।

মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন পর্যন্ত কোনো সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার শেষ হয়নি। হিন্দুধর্মাবলম্বীসহ পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালনে অবহেলায় প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত না করে ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচারপ্রক্রিয়া জটিল করা হচ্ছে, যা অগ্রহণযোগ্য ও সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।

ফাউন্ডেশন বলছে, অক্টোবরও যায়, কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। ধর্ষণসহ নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা এই সময়ে কমেনি, বরং বেড়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের বস্তুনিষ্ঠ ও স্বাধীন চিন্তা, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং মতামত প্রকাশের পথ রুদ্ধ করার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি ও হামলা, কারা হেফাজতে মৃত্যু, সীমান্তে হতাহতের ঘটনাও বন্ধ হয়নি। অপরদিকে গণপিটুনির মতো ঘটনাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। ঘটনা শুরুর পর প্রশাসনকে উদ্বেগের কথা প্রকাশ করলেও হিন্দু সম্প্রদায়কে জানানো হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, দ্রুত প্রতিমা বিসর্জনের জন্য তাগাদা দেওয়া হয়।

সুলতানা কামাল বলেন, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দশমীর দিন বিসর্জন দিতে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কায় অষ্টমীর দিনই বিসর্জন দিয়ে সেখানকার দুর্গাপূজা শেষ করা হয়। প্রতিমা বিসর্জনের পরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মন্দিরের স্থান ত্যাগ করলে হামলাগুলো সংঘটিত হয়।

পরস্পরের দোষারোপের রাজনৈতিক সংস্কৃতি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয় মন্তব্য করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটলেই রাজনৈতিক দলগুলো একে অন্যকে দোষারোপ করে। এতে মূল অপরাধীরা প্রকারান্তরে দৃষ্টির বাইরে চলে যায়। ফলে প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত করা যায় না।’