যাবজ্জীবন নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন সর্বোচ্চ আদালত
যাবজ্জীবনের প্রাথমিক অর্থ দণ্ডিতের বাকি জীবন। এক মামলায় এক আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগের রায়ে এই অভিমত দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ আজ মঙ্গলবার সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে রিভিউ আবেদনটি নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ে বলা হয়, প্রাথমিক অর্থে যাবজ্জীবন কারাবাস মানে কোনো দণ্ডিতের বাকি জীবন। ফৌজদারি কার্যবিধি ও দণ্ডবিধির এ-সংক্রান্ত বিধানগুলো একসঙ্গে পড়লে যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাবাস। তবে আদালত, ট্রাইব্যুনাল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কাউকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলে সেই দণ্ডিত ব্যক্তি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫-এ ধারার সুবিধা পাবেন না।
রিভিউ আবেদনকারীর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, যাবজ্জীবন সাজা হলে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ৩০ বছর কারাগারে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি রেয়াতি সুবিধা পাবেন।আমৃত্যু কারাদণ্ড হলে দণ্ডিত কোনো রেয়াত পাবেন না।
গত বছরের মাঝামাঝি পুনর্বিবেচনার আবেদনটির ওপর শুনানি শেষে তা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছিল। বিষয়টি গত ২৪ নভেম্বর আবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। সেদিন পুনর্বিবেচনার আবেদনটির পুনঃশুনানি শেষে ১ ডিসেম্বর (আজ) রায়ের জন্য তারিখ রাখেন আপিল বিভাগ। ধার্য তারিখে রায় ঘোষণা করলেন আপিল বিভাগ।
একটি হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। দুই আসামি হলেন আতাউর মৃধা ও আনোয়ার হোসেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। অন্যদিকে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠে।
শুনানি শেষে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধ আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আপিল বিভাগ যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ ৭ দফা অভিমত দেন।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আসামি আতাউর মৃধা আবেদন করেন।